নাফ নদী ঘেষা নয়নাবিরাম নেটং পাহাড়, ঐতিহাসিক মাথিনের কুপসহ নানান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত টেকনাফকে অবলোকন করতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটছে। অপরদিকে মিয়ানমার সাথে সীমান্ত বানিজ্যের মাধ্যমে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে যাওয়া টেকনাফ স্থলবন্দরটিও এ উপজেলায় অবস্থিত। এধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপঃশহরের প্রধান সড়কটির মেরামত কাজ ধমকে যাওয়ায় পর্যটক ও সাধারণ যাত্রীদের দূভোর্গ চরম আকার ধারণ করেছে। বন্দরের বানিজ্যবাহী ভারী যান চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফবাসীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের অসমাপ্ত মেরামত কাজ কেন সমাপ্ত হচ্ছেনা? এই প্রশ্ন সবার। খানা-খন্দকে ভরা সড়কের ফলে সীমান্তবাসীর দূর্ভোগ চরম থেকে চরম আকার ধারণ করছে।
কবে নাগাদ এ সড়কের বাকী অংশের কাজ শেষ হবে তার কোন ইঙ্গিতও নেই। টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক মহাসড়ক টেকনাফবাসীর জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এ সড়ক দিয়ে দেশের অভ্যান্তরে যাতায়ত ও প্রতিনিয়ত জেলা সদরের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যোগাযোগ করতে হয়। স্বাধীনতার দীর্ঘ বছর সরু সড়ক দিয়ে এলাকাবাসী যাতায়ত করে আসছিল। অনেক ঘটনা দূঘর্টনা সংঘটিত হলেও এলাকাবাসী বরণ করে নিয়েছিল। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশের মহাসড়ক থেকে আরম্ভ করে গ্রামীণ সড়ক পর্যন্ত প্রশস্থ ও উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু টেকনাফ-কক্সবাজার সড়ক এতই যে গুরুত্ব বেড়েই গিয়েছে এর পরও সড়ক উন্নয়নের কোন ইঙ্গিত নেই। স্বাধীনতার পর বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে একবার ও গত ২০১৫সালে একবার সড়ক উন্নয়নে সামান্যতম উন্নয়ন কাজ করেছেন বলে এলাকাবাসী জানান। যা মেরামত করা হয়েছে তা ভেংগে যেতে শুরু করেছে এবং এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সিকিভাগও নই। বিগত ২০১৫সালে বর্তমান সরকারের সফল যোগাযোগ মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের টেকনাফ কক্সবাজার সড়কের ১০/১২টি সেতু নিমার্ণ করেছেন। পাশাপাশি টেকনাফ কক্সবাজার সড়কের টেকনাফ পৌর সভার শাপলা চত্বর থেকে হ্নীলা পর্যন্ত নি¤œ মানের সড়ক মেরামতের কাজ করেছেন। বাকী হ্নীলা হতে উখিয়া উপজেলার থাইংখালী পর্যন্ত প্রায় ৩০কিলোমিটার সড়কের মেরামত কাজ এখনো শেষ হয়নি। কবে নাগাদ পুনরায় সড়ক মেরামতের টেন্ডার আহবান করে পুনঃ মেরামতের কাজ করা হবে এই প্রত্যাশায় প্রহর গুনছেন এলাকার জনগণ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কক্সবাজার সূত্রে জানা গেছে, হ্নীলা হতে থাইংখালী পর্যন্ত সড়ক মেরামতের কাজ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চলতি জানুয়ারী মাসে কাজ আরম্ভ করার কথা রয়েছে। কিন্তু জানুয়ারী মাসের একসপ্তাহ পেরিয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহ শুরু হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দেখা মিলছেনা বলে জানান সীমান্ত উপজেলার লোকজন। শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে টেকনাফের সেন্টমার্টিনদ্বীপ ও এ উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট দেখার জন্য দেশী বিদেশী হাজার হাজার পর্যটক টেকনাফে প্রতিদিন ভ্রমণে আসছে। এদের মধ্যে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দেশের কর্ণধার পর্যন্ত আসছেন। আসার সময় সড়কে এ করুন দশা দেখে যোগাযোগ মন্ত্রী ও এলাকার সাংসদের কথা বলাবলি করছে বলে সূত্রে জানায়। এ ছাড়া এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত বাণিজ্য বুঝায় গাড়ী টেকনাফ স্থলবন্দর হতে দেশের অভ্যান্তরে চলে যাচ্ছে। এক দিকে স্থলবন্দরের বাণিজ্য বুঝায় গাড়ী, অপর দিকে পর্যটকদের গাড়ী এর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের যাতায়তের গাড়ী নিয়মিত চলাচল করছে। কিন্তু গাড়ীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও বিকল্প সড়ক না থাকায় এ সড়ক দিয়ে যাতায়ত করতে হচ্ছে। জরাজীর্ন এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে যেমনি দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে তেমনি নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ। দেশের শীর্ষ পর্যায়ের পর্যটকেরা টেকনাফে ভ্রমণে আসার সময় ব্যবহার করছে অত্যাধুনিক মানের মূল্যবান গাড়ী। কিন্তু এ গাড়ি এ সড়ক দিয়ে যাতায়তের সময় নষ্ট হয়ে পড়ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। তাই এলাকার সচেতন মহল বর্ষা শুরুর আগেই এ গুরুত্বপূর্ণ টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক মহা সড়কটি জরুরী ভিত্তিতে পুনঃ মেরামত করার জন্য যোগাযোগমস্ত্রী ওবাইদুল কাদের ও উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদির জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।