টেকনাফ ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মাঝে নানান অভিযোগ। প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ভূমি অফিসে বিভিন্ন অপকর্মের লিপ্ত রয়েছে একজন অসাধু কর্মকর্তা এবং স’ানীয় চিহ্নত দালালচক্র। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন ভূমি অফিসকে ঘিরে রাখে ২০-২৫ জন দালাল। এরা বাইরে থেকে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে তারপর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিভিন্ন প্রলোভনে ফেলে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। এতে প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারন মানুষ। খতিয়ান, নামজারি, খাজানা, দাখিলা কাটাতে আসা লোকজন ভূমি অফিসে না ঢোকার আগেই দালালদের খপ্পরে পড়ে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বেশ কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। এদের মধ্যে সার্ভেয়ার সবুজ অন্যতম। সে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজে হাত দেয় না। টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দুনীর্তিবাজ সার্ভেয়ার সবুজের অনেক তথ্য। সেই দীর্ঘদিন ধরে টেকনাফ ভূমি অফিসে চালাচ্ছে রাম-রাজত্ব। তার এক্সট্রা পাওয়ারের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে ভূমি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এমনটি জানান ভুক্তভোগীরা।
বিভিন্ন সূত্রে আরো জানা যায়, গভীর রাতে টাকার বিনিময়ে এই কর্মকর্তা অফিসের নানাবিধ কার্যক্রম সমপাদন করে এবং একাধিক রিসিভ বই ব্যবহারসহ টাকা লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আবার সন্ধ্যা পার হলে ভূমি দালালেরা মোটা অংকের চুক্তি নিয়ে নামজারি, খতিয়ান তুলা, দাখিলা কাটা ইত্যাদি কার্যক্রম সমাধান করতে আসে। একটি জমির নামজারি করতে আবেদন বাবদ কোর্ট ফি, নোটিস জারির ফি, রেকর্ড সংশোধন ফি ও মিউটেশন খতিয়ান ফিসহ সরকারিভাবে যা নেয়ার নিয়ম রয়েছে তা উপেক্ষা করে তার চেয়ে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই অসাধু কর্মকর্তা। এছাড়া প্রতিটি নামজারি, মিসকেস পরিচালনা, খাসজমি বরাদ্দসহ নানা ক্ষেত্রে সরকারি আইন বর্হিভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। চাহিদা মতো অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে গ্রাহকদের হয়রানি করা হয়।
উল্লেখ্য, বিগত ৫-৬ বছর আগে সাইদুল ইসলাম সবুজ সার্ভেয়ার হিসেবে টেকনাফ ভূমি অফিসের যোগদান করে। তার কাজ হচ্ছে সরকারি খাসজমি বন্দোবস্তি দিলে তা পরিমাপ করে চিহ্নত করা। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, নামজারি করা, খতিয়ান তোলাা থেকে শুরু করে ভূমি অফিসের এমন কোনো কাজ নেই, যেখানে সে হাত দেয় না । স’ানীয় কয়েকজন দালালের মাধ্যমে তার এই অপকর্ম বেড়েই চলছে দিনের পর দিন। একটি নামজারিতে সরকারি ফ্রি ১১শত ৭৫ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও একটি নামজারিতে করতে হাতিয়ে নিচ্ছে ৬০-৭০ হাজার টাকা। আবার জমির খতিয়ানে কোনো সমস্যা থাকলে লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করে।
সচেতনমহল অভিমত প্রকাশ করে বলেন, এই অসাধু কর্মকর্তাদের দ্বারা সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এ ব্যাপােের টেকনাফ সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাহেদ ইকবাল বলেন, সার্ভেয়ার সবুজ যদি কোনো অপরাধে লিপ্ত থাকে, তার দায়ভার তাকেই বহন করতে হবে। তার অপকর্মের ব্যাপারে কেউ যদি আমাকে লিখিত অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস’া নেব।