কক্সবাজারকে নিয়ে সরকারের মহা উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবার কক্সবাজার থেকে মন্ত্রী করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই কক্সবাজারের ত্যাগী একজন রাজনৈতিক নেতাকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য বিহীন মন্ত্রী করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
গত কয়েকদিন আগে গণভবনে এনিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র জানায়। এ আলোচনায় চট্টগ্রামের একজন মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের দুইজন প্রভাবশালী নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এসময় কক্সবাজার থেকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
এছাড়াও খুব শিগগিরই কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) গঠন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছে- একজন পরিচ্ছন্ন ও ক্লীন ইমেজের ত্যাগী নেতাকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী করা হবে। একই সাথে গুরুত্ব বিবেচনায় উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও নির্বাচিত করা হবে কক্সবাজারের সন্তানকে।
এদিকে টেকনোক্রেট মন্ত্রীর আলোচনায় রয়েছে প্রফেসর ড. আনসারুল করিম। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর সন্তান আনসারুল করিম আওয়ামীলীগের পরিক্ষীত ও ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও বিতর্কের উর্ধ্বে থাকায় আনসারুল করিমকে এ পদে আসীন করা হতে পারে।
কক্সবাজারের ত্যাগী এই আওয়ামীলীগ নেতার জীবন বৃত্তান্ত দেখে জানা যায়- তিনি করাচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদ পরিবেশ বিজ্ঞানে থিসিস গ্রুপে এমএসসিতে প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ১৯৬৯-৭০ সালে করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান সমিতির সহ-সভাপতি ১৯৭২-৭৩ সাল কক্সবাজার কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৬ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে যোগদান এবং ১৯৮৮ সালে ইউনেস্কো ফেলোশিপ নিয়ে কালকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুন্দরবনের উদ্ভিদের উপর পরিবেশীয় প্রভাব শীর্ষক সফল থিসীসের জন্য পি.এইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন। তাঁর থিসীস ম্যানগ্রোভ গবেষনায় সমসাময়িক বিশ্বে সবচাইতে তথ্যবহুল গবেষণা হিসাবে স্বীকৃত পায়।
তার গবেষণা প্রবন্ধের উচ্চমানের স্বীকৃতি স্বরূপ আরব আমীরাতে শেখ জায়েদ বিন আল-নাহিয়ান কর্তৃক স্বর্ণপদক পান।
তার উদ্ভাবিত ম্যানগ্রোভ সাকসেশন মডেল বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানগ্রোভ বিবর্তনের গবেষণা মডেল হিসাবে স্বীকৃত। উপকূলীয় পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রের গবেষণা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে তার দক্ষতার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সমূহে তার যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে।
১৯৯৯ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে প্রফেসর পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন তিনি। পরে শিক্ষকতা ছাড়াও ইউ,এন,ডিপি, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে দেশে ও বিদেশে পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত প্রকল্প প্রস্তুতকরণ ও ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন, মনিটরিং প্রকল্পে টিম লিডার হিসাবে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত জার্নালে উপকূলে ম্যনগ্রট্টভ বনায়ন, সমন্বিত ভূমি ব্যবস্থাপনার উপর ৩০টির ও অধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে অংশগ্রহণ, বিশ্ব জলবায়ু তহবিল “গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ড” এর ট্রানজিশন কমিটির উপদেষ্টা সদস্য, ওচঈঈ বা জলবায়ু সংক্রান্ত আন্ত:দেশীয় কমিটির জাতীয় পর্য্যায়ে গ্রীন হাউজ নিঃসরন পরিমান নির্ণয় সংক্রান্ত গাইড লাইন প্রস্তুতকরণের কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক। নাগরিক পর্য্যায়ে বাংলাদেশ ভারত সহযোগিতা বিষয়ক যৌথ কমিটির সদস্য।
তিনি জাপান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালেয়শিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত, পাকিস্তান, দুবাই, সারজাহ, আল-আইন, কাতার, তাজিকিস্তান, জার্মানী, সুইজারল্যান্ড, ভিয়েনা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লন্ডন, এডিনবরা, দক্ষিণ আফ্রিকা, আমেরিকা, মেক্সিকো, পানামা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন ও পর্যটন শিল্প সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়েছেন।