ত্বকের সজীবতা ও প্রাণহীনতাকে ফিরিয়ে আনতে কেউ কেউ ছুটে যায় বিউটি পার্লার আর স্কিন কেয়ার ক্লিনিকগুলোতে। অনেকেই ঘরে বসেই সেরে ফেলছেন রূপর্চ্চা। কিন্তু কিভাবে? আমরা সকলেই কম-বেশি জানি ত্বকের যতেœ মৌসুমি ফলের অসাধারণ গুণের কথা। ষড় ঋতুর এই দেশ বাংলাদেশের জন্য নানা বর্ণের ও রকমারী স্বাদের মৌসুমী ফল যেন আশীবার্দ স্বরূপ। সুলভে ও স্বল্পমূল্যে প্রায় পাওয়া যায় এই মৌসুমী ফলগুলো। ছোটবেলা থেকেই নানী-দাদীর কাছে ত্বক ও চুলের যতেœ তাজা ফলের অবদানের কথা অনেকেই শুনে থাকবেন। শুধু এই ঈদের আয়োজনেই নয়, সারা বছর খাদ্যতালিকায় তাজা ও রঙিন ফলের স্থান দিয়ে খুব সহজেই আমরা পেতে পারি দ্যুতিময় ও তারুণ্যদীপ্ত ত্বক। আজ আমরা জানব ত্বকের যতেœ সহজলভ্য দেশী ফলগুলোর জানা ও অজানা নানা তথ্য।
ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করে আম
স্বাদে, গন্ধে ও মাধুরীতে পরিপূর্ণ আম ছোট-বড় সকলের কাছেই জনপ্রিয়। আমের পুষ্টিগুণ তো বলেই শেষ করা যাবে না। এক কাপ পাকা আমে ১০০ ক্যালরি, ১ গ্রাম প্রোটিন, দৈনন্দিন প্রয়োজনের ভিটামিন এ ৩৫%, ভিটামিন বি ৬%। ফাইবার সমৃদ্ধ ফল বলে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য পথ্য স্বরূপ। আমে বিদ্যমান ভিটামিন এ ত্বক ও চুলের টিস্যু বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন। বিটা ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎস আম। গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিটাক্যারটিনয়েড সমৃদ্ধ ফল খেলে স্বাভাবিকভাবে ত্বকের রঙ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলত্বর হয়। নিয়মিত আম খেলে শরীরের আয়রণ ঘাটতি পূরণ হবে এবং হিমুগ্লোবিন থাকবে নিয়ন্ত্রণে। হিমোগ্লোবিনের অভাবে ডার্ক সার্কেল, চুল পড়া, ঠুট কালো হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পানি সমৃদ্ধ ফল হিসেবে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। শুধু ত্বকের যতেœই নয় হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, স্ট্রোক প্রতিরোধ এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায় আম। এসকল গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের কারণে আমের আধিপত্য অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি।
পুষ্টির আধার কাঁঠাল
কাঁঠাল আমাদের দেশের জাতীয় ফল হলেও এশিয়ার অন্যান্য গ্রীষ্মম-লীয় দেশ যেমন- ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এমনকি ল্যাটিন আমেরিকাতেও এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। ১০০ গ্রাম কাঁঠালের কোয়া ৯৫ ক্যালরি শক্তি, ২৩% ভিটামিন সি, ১০% ভিটামিন এ প্রদান করে। এছাড়াও আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। সুক্রোজ ও ফুন্টোজে ভরপুর কাঁঠালকে শক্তি উৎপাদিত ফল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ফাইবার ইজম শক্তি বাড়িয়ে পরিপাকে সহায়তা করে দূষিত পদার্থ অপসারণ করে ত্বককে রাখে সুস্থ। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এক কাপ কাঁঠাল আপনার ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলবে। উদাহরণ স্বরূপ ভিটামিন সি ত্বকে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই কাঁঠাল শুধু ফলের রাজাই নয়, পুষ্টির আধারও।
ঘুমের প্রাকৃতিক ওষুধ কলা
সুস্বাদু ও পুষ্টিকর কলা সারা বছরই সহজেই পাওয়া যায়। এই জনপ্রিয় ফলটি সুষম খাদ্য তালিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কলার হরেক রকম শ্রেণীভেদ থাকলেও সাগর, সরবি, চিনি চাম্পা বেশি সমাদৃত। এবার আসি কলার পুষ্টিগুণ নিয়ে। কলা একটি ভাল প্রবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। এর এই জাদুকরী ক্ষমতা পরিপাকে ক্রিয়া বৃদ্ধি ও শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন ১টি কলা খেলে হিমগ্লোবিন ঘাটতি হবে না। এছাড়া অ্যানিমিয়া রোগীর জন্য আদর্শ খাদ্য কলা। যারা অনিদ্রা ও বিষন্নতায় ভুগছেন রাতের খাবারের শেষে অবশ্যই ১টি কলা খাবেন। কারণ এর ট্রিপটোফ্যান ঘুমের প্রাকৃতিক ওষুধ। পর্যাপ্ত ঘুম দূর করবে ডার্ক সার্কেল ও চেহারার অবসন্নতা। কলার ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি ত্বক, চুল ও নখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, খাদ্যে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর অভাবে চুল পড়া, আগা ফাটাসহ নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।
ত্বকের ক্যানসার ও বলিরেখার অস্ত্র লিচু
সুস্বাদু ও সরস লিচু কার না পছন্দ। শুধু আমাদের দেশেই নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশে ডেজার্ট হিসেবে এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকের কোলাজেন কমে যায়। ত্বকে দেখা দেয় বলিরেখা। এর প্রধান কারণ শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কমে যাওয়া। লিচুতে অলিগোনোল নামক এক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। যা কোলাজেন তৈরি ছাড়াও সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রাখে সুরক্ষিত। সে কারণে লিচুকে ত্বকের ক্যানসার ও বলিরেখার অস্ত্র বলা হয়। কম ক্যালরি ও লো-ফ্যাটযুক্ত ফল লিচু। তাই যারা ওজন কমাতে চান, ডেজার্ট হিসেবে মিষ্টির পরিবর্তে যুক্ত করুন এই ফাইবার সমৃদ্ধ ফলটি। ব্যায়ামের পর লিচু খেলে অবসাদ যায় চলে। এর ফ্রু ফ্রন্টোজ তাৎক্ষণিক এনার্জি বুস্ট আপ করে। লিচুতে ভিটামিন ডি ও খনিজ পদার্থে (কপার জিংক, ম্যাঙ্গানিজ) ভরপুর বলে চুলের সুস্থতার জন্য ভাল টনিক।
প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটি
লেবু ও জাম্বুরা
শুধু রুচিবর্ধকই নয়, লেবু, জাম্বুরাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটি বলা হয়। ভিটামিন সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ডের মহান উৎস এই ফলগুলো ত্বক, নখ ও চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে বিশেষ কার্যকর। নিয়মিত ফলগুলো খেলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়ে ত্বক হয়ে উঠে মসৃণ। লেবুর শরবত শুধু রিফ্রেশিং পানীয়ই নয়- উষ্ণ পানি ও লেবুর মিশ্রণ ওজন কমানোর জন্য আদর্শ টনিক। ডায়েটেশিয়ানরা ডায়েটচার্টে জাম্বুরাকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। ভিটামিন ই, ফোলেট, কপার, জিংক, ফসফরাস, পটাসিয়াম সমৃদ্ধ লেবু ও জাম্বুরা ডায়াবেটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজমসহ অনেক সমস্যার মহৌষধ। খাবারের পর ১ টুকরো লেবু চুষে খেলে মুখগহ্বরে জীবানুর সংক্রমণ হয় না। নিজেকে সুস্থ ও তারুণ্যকে ধরে রাখতে প্রতিদিন বেশি বেশি লেবু ও জাম্বুরা খাবেন, কারণ সারা বছর জুরেই সুলভ মূল্যে পাওয়া যায় জাম্বুরা ও লেবু।
মহৌষধ পেঁপে
মাখনের মত তুলতুলে নরম পাকা পেপেকে রোগের পথ্য বলা হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও আফ্রিকা, পর্তুগাল, স্পেন, ভারত, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডে সারা বছরই পেপের চাষ হয়। আসুন পেপের গুণাগুণগুলোর সঙ্গে একে একে পরিচিত হই। প্রথমত পেপেতে প্রচুর জলীয় অংশ থাকায় এটি ত্বককে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের উৎস পেঁপে। বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষ সারিয়ে তুলে ত্বককে রাখে দাগ ও বলিরেখা মুক্ত। ফাইবারযুক্ত পেঁপে এমনই একটি ফল যা সহজেই শরীরের ওজন কমিয়ে ওজনকে রাখে নিয়ন্ত্রণে। ইজম প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে শরীরের টক্সিন বের করে দেয়। তাই ডায়েট চার্টে সকালের দিকে খেতে পারেন। ফলে সারা দিনের কাজের শক্তি যোগাবে। ইনটেস্টাইনে কৃমি থাকলে দেখা দেয় এলার্জি, চুলকানি ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা। কিন্তু আপনি জানেন কি পেঁপেতে বিদ্যমান এনজাইম কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। নিজেকে রোগ মুক্ত ও সুন্দর রাখার জন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় চাই মহৌষধ পেঁপে।
ওজন কমাতে তরমুজ
তৃষ্ণা মেটাতে ও গ্রীষ্মের গরমে পানি শূন্যতা দূরীকরণে প্রথম সারির ফল তরমুজ। কারণ এই ফলের ৯২ শতাংশই পানি। ত্বকের পানিশূন্যতা দূর করা ছাড়াও ইলস্টিন ও কোলাজেন তৈরি করে ত্বকে সহজে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। অতিরিক্ত সেরাম সিক্রেশন বন্ধ করে ব্রণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণা অনুযায়ী যারা বেশি তরমুজ খান তাদের ওজন কমার প্রবণতা অন্যদের থেকে বেশি।
ভেষজ টনিক ফল লটকন
এই লোভনীয় ফলটির নাম শুনলেই মুখে পানি চলে আসে। প্রাচীনকালে চীনবাসীরা ত্বকের যতেœ লটকনকে ভেষজ টনিক হিসেবে ব্যবহার করত। ১০০ গ্রাম নটকনে আছে ৮৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি যা শরীরের আয়রন এর ভারসাম্য রক্ষা করে অ্যানিমিয়া রোগের পথ্য হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক গবেষণায় লটকনকে সুপার ফুড এর তালিকায় যোগ দেয়া হয়েছে। বয়স ও স্ট্রেসের কারণে চোখের ও ঠোটের আশেপাশের সেনসিটিভ জায়গাগুলোতে সুক্ষলাইন পড়ে, এই সুপারফুডটি খেলে সেই লাইনগুলো সহজে দেখা দেবে না। অনিদ্রা ও স্মৃতিভোলা রোগ প্রতিকারে নটকনের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে।
কোলেস্টেরল কমাতে পেয়ারা
মৌসুমি ফল পেয়ারা তার স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণের কারণে বেশ সমাদৃত। ১০০ গ্রাম তাজা পেয়ারায় ২২৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, তাই একে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল বলা হয়। ভিটামিন সি এর গুণাগুণ নতুন করে বলার কিছু নেই। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যে ভিটামিন সি-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। পেয়ারা রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে। আর যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা নিশ্চিন্তে পেয়ারাকে বেছে নিতে পারেন।
ন্যাচারাল সানস্ক্রিন জাম
মিষ্টি, সরস ও রঙিন ফলটি শিশুদের ভীষণ প্রিয়। ত্বক, চুল ও নখের সুস্বাস্থ্যের জন্য এর ভূমিকা অপরিসীম। প্রথমত: এই ফলের ৮৫ শতাংশই পানি যা সুস্থ ও প্রাণবন্ত ত্বকের জন্যে অপরিহার্য। অলিফেনল ও অ্যালথোসায়ানাইড এই দুই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কোলাজেন বৃদ্ধিতে যৌথ ভূমিকা পালন করে ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেরে রক্ষা করার কারণে জামকে ন্যাচারাল সানস্ক্রিন বলা হয়। স্বল্প ক্যালরি ও অধিক ফাইবার এই দুটো গুণের সংযোজনে ওজন কমানোর ডায়েট চার্টে জামের গ্রহণযোগ্যতা অনেক খানি বাড়িয়ে দিয়েছে। ভিটামিন এ, বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ জাম প্রেগনেন্সিতে আদর্শ ফল হিসেবে বিবেচিত হয়।
ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে আনে ডালিম
আজ থেকে চার হাজার বছর পূর্বে ইরানে ডালিমের প্রথম চাষ হলেও আমাদের দেশে এর কদর অনেক বেশি। প্রচুর পরিমাণে আয়রণ থাকায় ডালিম রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ অংশ নেয়। ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে ত্বকে অকাল ভাজ ও দাগ পড়া থেকে রক্ষা করে। অতিরিক্ত সেরাম সিক্রেশনের কারণে ত্বকে সহজেই ব্রণ দেখা দেয়। ডালিম অতিরিক্ত সেরাম সিক্রেয়শনে বাধা দিয়ে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে আনে। এছাড়া ব্রণের পর যে ক্ষত বা দাগ থাকে, কোলাজেন তৈরির মাধ্যমে ধীরে ধীরে ক্ষত সারায়। ডালিম জিংক-এর উৎস। ত্বকের সুস্থতার জন্য জিংক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ডালিম-এর অসাধারণ আর একটি গুণ হলো এটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে সূর্যের ইউভিবি ও ইউভি এ থেকে সুরক্ষা করে।
স্ট্রবেরি ত্বককে রাখে টানটান ও উজ্জ্বল
বিদেশী ফল হিসেবে প্রচলিত স্ট্রবেরি আজ আমাদের দেশের মৌসুমি ফলে স্থান পেয়েছে। রঙে রূপে আকর্ষণীয় স্ট্রবেরিকে সৌন্দর্য বর্ধক ও পুষ্টির ভা-ার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ১ কাপ (১৬৬ গ্রাম) স্ট্রবেরিতে ৪৪.৮২ আই ইউ ভিটামিন এ, এবং ৯৪.১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৩.৮১ গ্রাম ফাইবার থাকে। মেটাবলিজম বাড়িয়ে ও ক্ষুধা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্ট্রবেরির অবদান অতুলনীয়। এতে বিদ্যমান ফোলেট, সেরোটোনিন, ডোপামিন সিক্রেশন বাড়িয়ে দিয়ে অনিদ্রা ও বিষণœতা দূর করে দেহ ও মনকে রাখে প্রফুল্ল। প্রতিদিন স্ট্রবেরি খেলে ত্বকে বলিরেখা তো পড়বেই না বরং ত্বক থাকবে টানটান ও উজ্জ্বল।
অ্যান্টি অ্যাজিং খাদ্য বরই
বরই-এর আছে হরেক রকমভেদ। কোনটা মিষ্টি আবার কোনটা টক। ওজন কমানো, রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ অনেক গুণাগুণ রয়েছে বরই-এ। ফাইবার-এ পরিপূর্ণ বড়াই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি নখ ও চুলের জন্য বিশেষ কার্যকর। অ্যান্টি অ্যাক্সিডেন্ট ত্বকের কালো দাগ ও বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে, তাই তো একে অ্যান্টি অ্যাজিং খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ সকল দেশি ফল ছাড়াও রয়েছে চালতা, বেল, কামরাঙা, করমচা প্রভৃতি। ত্বকের রঙ কালো বা ফর্সা যেমনই হোক না কেন ত্বকের মূল সৌন্দর্য হলো লাবণ্য। কিছু পর্যাপ্ত যতেœর অভাব, পরিবেশ দূষণ, রোদ, মানসিক দুশ্চিন্তা- এ সব কারণে ত্বকের এই লাবণ্য ধরে রাখা কঠিন। আর এর সমাধান এনে দেবে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় দেশী ফলের সংযোজন।
ত্বককে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখে ডাবের পানি
ক্লান্ত শরীরে ১ গ্লাস ডাবের পানি দেহ ও মনে এনে দেয় প্রশান্তির ছোঁয়া। ১ কাপ পানিতে ৩ গ্রাম ফাইবার, ২ গ্রাম প্রোটিন থাকে বলে ডায়েটেশিয়ান ও জিম ইন্সট্রাক্টর স্পোর্টশ ড্রিংক হিসেবে ডাবের পানিকে প্রাধান্য দেন। এর ফাইবার শরীর থেকে টক্সিন দুর করে ত্বককে রাখে সুস্থ ও রোগমুক্ত। অন্যান্য সফটড্রিংক এর পরিবর্তে বেছে নিতে পারেন ভিটামিন, মিনারেল ও ইলেকট্রোলাইটে পরিপূর্ণ এই নিরাপদ স্বাস্থ্যকর পানীয়কে। যা নিয়মিত পানে মুছে যাবে ত্বকের বিবর্ণতা ও মলিনতা। সুবিধা হলো সকল ঋতুতেই কচি ডাব বাজারে পাওয়া যায়।