দায়সারা ও হযবরল ভাবে চলছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত ইসলামী ব্যাংক জেলা ক্রিকেট লীগের আসর। প্রতিদিন ম্যাচ মাঠে গড়ালেও ভেন্যুতে আসেন না ডিএসএ’র কর্মকর্তাদের। টূর্ণামেন্ট চালিয়ে যাচ্ছে আম্পায়াররা। ম্যাচ চলাকালীন মিলছে না কাঙ্খিত সুযোগ-সুবিধা। এতে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে ক্লাব কর্মকর্তা ও খেলোয়াড়দের মাঝে।
দীর্ঘ ৬ বছর পর নানা জটিলতা কাটিয়ে মাঠে গড়িয়েছে জেলা ক্রিকেট লীগ। তাও প্রচারনা বিহীন। এক প্রকার চুপিসারে সম্পন্ন হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই জানেন না টূর্ণামেন্ট শুরুর খবর। দাওয়াত দেয়া হয়নি ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়াবিদদের। প্রচারণা না হওয়ায় দর্শকহীন ও মলিনভাবে চলছে আসরের ম্যাচগুলো। ৪ নভেম্বর সকালে সরেজমিনে কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম ও জেলে পার্ক মাঠে গিয়ে দেখা যায়, করুণ দশা। সংস্কার করা হয়নি মাঠের। মাঠজুড়ে ছোট গর্ত তৈরি হয়েছে। যা সামান্য বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। ফিল্ডিংয়ে খেলোয়াড়দের দৌড়াদৌড়িতে ওইসব গর্ত থেকে বালি সরে গেছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে ফিল্ডিং করতে হচ্ছে। টূর্ণামেন্টে জন্য তৈরি করা হয়নি পিচের। ঝরাজীর্ণ ম্যাট দিয়ে খেলা চলছে। জেলেপার্ক মাঠে ম্যাট না দিয়ে বস্তা আর পাপুস জোড়া তালি দিয়ে পিচের বিকল্প করা হয়েছে। যার দরূণ ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই বিপত্তি নিয়ে খেলতে হচ্ছে খেলোয়াড়দের। তাছাড়া ম্যাটের পিচে খেলে প্রকৃত ক্রীড়া বিকাশ হয়না বলে জানান ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা। অপরদিকে খেলা চলাকালীন টূর্ণামেন্টের সম্পাদক ও ডিএসএ’র কর্মকর্তারা আসেনা। আম্পায়াররা এসে ম্যাচ পরিচালনাসহ যাবতীয় কাজ করছে। জেলে পার্কের মাঠ ঘেষে বিমান বন্দর সম্প্রসারণের নির্মাণ কাজ চলছে। এখান থেকে পানি মাঠে প্রবেশ করছে। ফলে পিচ্ছিল হয়ে গেছে মাঠের একাধিক অংশ। আর তার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে খেলা চলছে। এসব বিষয় ডিএসএ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করেন ক্লাব কর্মকর্তা ও ম্যানেজারা। কিন্তু তাতে কোন কর্ণপাত করেনি তারা। মাঠে খেলোয়াড়, ক্লাব কর্মকর্তা ও ম্যানেজারদের বসার কোন সুযোগ নেই। চেয়ার আনা হয় শুধু ৩০টি। যার জন্য দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করতে হয় তাদের। লীগ পর্যায়ের খেলায় নগন্য দর্শক ও মাত্র ৩০টি চেয়ার নিয়ে কিভাবে ম্যাচ চলছে তা সবাইকে হতবাক করেছে। জানা যায়, লীগের স্পন্সরকারী ইসলামী ব্যাংক ৩ লাখ টাকা দেন জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে।
কিন্তু লীগের যথাযথ আয়োজনে এ যাবত তিন ভাগের এক ভাগ টাকাও খরচ করা হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসএ’র এক সদস্য জানান, চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে লীগ চলছে। লীগের সফলতায় ৩ লাখ টাকার মধ্যে অন্তত এক লাখ টাকা খরচ করা হলেও জেলাব্যাপী ব্যাপক সাড়া পাওয়া যেত। কিন্তু কতিপয় কর্মকর্তা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত রয়েছে। প্রকৃত অর্থে নামকা ওয়াস্তে কাজ করে বিভিন্ন ইভেন্টের টাকা চলে যায় তাদের পকেটে।
এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অরূপ বড়–য়া অপু জানান, দীর্ঘদিন পর জেলা লীগ শুরু হয়েছে। সুন্দর ভাবে ম্যাচ এগিয়ে চলছে। এতে কোন অব্যবস্থাপনা নেই। যারা অভিযোগ করছে তারা ক্রীড়া প্রেমী নন। তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো করে লীগ আয়োজন করতে গিয়ে পিচ করা হয়নি। তবে ম্যাটে আরো ভালমানের খেলা হচ্ছে।