যুদ্ধাপরাধী আলবদর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে এই রায় ট্রাইব্যুনাল থেকে কারাগারে পৌঁছেছে। ফাঁসির আসামি নিজামীকে রায় পড়ে শুনিয়ে জানতে চাওয়া হবে, তিনি নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না।
আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুনাভ চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে জানান, “বিচারকদের সইয়ের পর সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার আগে মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ খারিজের রায় প্রকাশ করা হয়।নিয়ম অনুযায়ী এই রায় এখন আমরা বিচারিক আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেব।”
এর আগে ৫ মে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ নিজামীর আবেদন খারিজ করে দেয়। বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আদালতের সব বিচারিক প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় একাত্তরের বদরপ্রধান নিজামীর সামনে এখন কেবল ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগই বাকি।
জামায়াত আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান। তার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বেই যে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল- এই মামলার বিচারে তা প্রমাণিত হয়।
রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় রোববার রাতে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এখন সংবিধানের ৪৯ অনু্চ্ছেদ অনুসারে শেষ সুযোগে দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি প্রাণভিক্ষা চাইতে পারেন।
আসামি তা না চাইলে বা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা না পেলে সরকার দিনক্ষণ ঠিক করে কারা কর্তৃপক্ষকে ফাঁসি কার্যকরের নির্দেশ দেবে। তার আগে স্বজনেরা কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারবেন। রিভিউ খারিজের পর এরইমধ্যে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েরা কাশিমপুরে গিয়ে নিজামীর সঙ্গে একবার সাক্ষাৎ করেছেন। তবে সে সময় তারা ক্ষমা ভিক্ষার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।