ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র বন্ধ করে দ্রুত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তার মুক্তিতে আর বাধা দেবেন না। জনগণের নেত্রীকে জনগণের মাঝে ফিরিয়ে দিন।
রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পেতে সরকারের নির্দেশই সবচাইতে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল যে বক্তব্য দিয়েছেন, যদি তাই হয়, তবে তিনি বারবার মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়ার জামিন পেতে বাধা দিচ্ছেন কেন? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পেতে সরকারের নির্দেশই সবচাইতে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, চিকিৎসা ও জামিনে বাধা প্রদানের পেছনে সরকারের গভীর ভয়ংকর নীলনকশা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন দেশনেত্রীকে হয় দুনিয়া থেকে, না হয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে।
‘গত কয়েক দিন ধরে সরকারদলীয় লোকদের মিডিয়া এবং মন্ত্রী ও তাদের নেতাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দেশনেত্রীর চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সাহেবের বক্তব্য বিপরীতধর্মী। এতে বোঝা যায়, তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে নিষ্ঠুর তামাশা করছেন।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি দাবি করে রিজভী বলেন, পিজি হাসপাতালে তার চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নেই। ডাক্তারদের দিয়ে গঠিত বোর্ড তার রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় কোনো অগ্রগতি নেই। তারাও স্বীকার করছেন দেশনেত্রীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
‘আমরা জেনেছি, তিনি একেবারেই হাঁটাচলা করতে পারছেন না। ডায়াবেটিস, জটিল অন্যান্য রোগ ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থ। সরকার তার বড় ধরনের কোনো ক্ষতি করার জন্য সময়ক্ষেপণ করছে কিনা এ নিয়ে জনমণে প্রশ্ন গভীরতর হচ্ছে।’
তবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ক্ষতিকর কিছু হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
সরকারকে হুশিয়ার দিয়ে রিজভী আরও বলেন, এক মাঘে শীত যায় না। পরিস্থিতি সব সময় এক থাকে না। নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভাবুন। সময় বদলাতে তো সময় লাগে না। মানুষের আওয়াজ শুনুন। পায়ে পা মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে জনতা। ফুঁসছে মানুষ। জনতার আদালত তৈরি হচ্ছে।