বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ৩১ মে রাত ১২টার মধ্যে সিম-রিম পুনঃনিবন্ধন না করলে পরদিন মোবাইল সংযোগটি বন্ধ হয়ে গেলেও পরের ১৫ মাস অপারেটররা ওই নম্বরের বিপরীতে নতুন কোনো সিম বিক্রি করতে পারবে না। এর মানে কেউ নতুন সময়সীমার মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম-রিম পুনঃনিবন্ধন না করলেও ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে নিবন্ধিত হয়ে ওই নম্বরটি নতুনভাবে ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
সাড়ে চার মাসে ৯ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারী বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম-রিম পুনঃনিবন্ধন করেছেন দাবি করে বাকি ৪ কোটির জন্য নিবন্ধনের সময়সীমা এক মাস বাড়িয়ে সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে ১৫ মাসের সুযোগটি রাখা হয়েছে।
তবে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম নতুন সময়সীমা ঘোষণার পাশাপাশি জানিয়েছেন, ৩১ মে’র মধ্যে যারা সিম-রিম নিবন্ধন রি-রেজিস্ট্রেশন করবেন না তাদের মোবাইল নম্বরটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
ব্যবহারকারীদের পুনঃনিবন্ধনের বিষয়টি মনে করিয়ে দিতে সতর্কতা হিসেবে এ ব্যবস্থা। এ প্রক্রিয়ায় কারো সিম-রিম অবশ্য একবারের বেশি বন্ধ হবে না। আবার দৈবচয়ন ভিত্তিতে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হবে বলে সবার সংযোগই যে বন্ধ হবে এমনও না। যাদেরটা বন্ধ হবে সেটা হবে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টার জন্য।
তারানা হালিম বলেন, প্রথম দফা সময়সীমার মধ্যে বিভিন্ন কারণে কয়েক কোটি সিম নিবন্ধিত না হওয়ায় বিভিন্ন মহলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পুনঃনিবন্ধনের সময় এক মাস বাড়ানো হচ্ছে। রাত ১০টায় প্রথম সময়সীমা শেষ হওয়ার ঘণ্টা পাঁচেক আগে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে নতুন সময়সীমার ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী।
কর্মকর্তারা বলছেন, যারা নিবন্ধিত হতে পারেননি তাদের মধ্যে সোয়া এক কোটি ব্যবহারকারী চেষ্টা করেও ‘টেকনিক্যাল’ কারণে সিম-রিম পুনঃনিবন্ধন করতে পারেননি। তাদের বড় অংশের আঙুলের ছাপের সঙ্গে জাতীয় তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষিত আঙুলের ছাপের মিল পাওয়া যায়নি। এই সোয়া এক কোটি গ্রাহক সিম-রিম পুনঃনিবন্ধনের চেষ্টা করেছেন বলে তারা সাময়িক বন্ধের প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়বেন না।
তবে, আগামীএক মাসের মধ্যে তারা সমস্যার সমাধান করে সিম-রিম পুনঃনিবন্ধন করতে পারবে বলে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি) আশা করছে।
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম অবশ্য সতর্ক করে বলেছেন: ৩১ মে রাত ১২টার পর কোনো সতর্ক সঙ্কেত ছাড়া সাময়িক নয়, আমরা সম্পূর্ণভাবে সিমটি ডি-অ্যাকটিভ করে দেব।
সঙ্গে তিনি এও জানান, ৩১ মে রাত ১২টার পর যে সিমগুলো বন্ধ হয়ে যাবে পরবর্তী ১৫ মাসের জন্য সেগুলোর (নম্বর) বিক্রি স্থগিত থাকবে। এটা বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী নাগরিকদের জন্য, বিশেষ করে শান্তিরক্ষা মিশনে যারা কর্মরত আছেন তাদের সুবিধার্থে এটা করা হয়েছে।
‘এই নম্বরগুলো (১৫ মাস) কোথাও বিক্রি করা হবে না,’ বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এর ব্যাখ্যা দিয়ে বিশ্লেষকরা বলেছেন, কেউ যদি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ৩১ মে’র মধ্যে নিবন্ধন না করেন, তাহলে তিনি পরে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তার আগের নম্বরটিই পেতে পারেন। তবে সময় আর বাড়ানো না হলে আগামী বছরের আগস্টের পর বায়োমেট্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও আর আগের নম্বরটি পাওয়া সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে তাকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন নম্বর নিতে হবে।
তবে বিভিন্ন রকম জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে প্রতিবন্ধীদের জন্য তারানা হালিম বিশেষ সুবিধার কথা জানিয়েছেন। দেশের ১৫ লাখ প্রতিবন্ধীর জন্য আগামী এক মাস প্রত্যেক শনিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য বিশেষ নিবন্ধন সুবিধা থাকবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রতিবন্ধিদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে সমস্যা আছে তাদের জন্যও বিশেষ সুবিধা থাকবে।