দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বছরের পুরোটা সময় জুড়েই পর্যটকের আনাগোনা ছিল কক্সবাজারে। আর ভরা মৌসুম হওয়ায় এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত এই পর্যটন নগরী। সমুদ্র সৈকত দেখার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভিড় করছেন তারা। সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকের হৈ হুল্লোড়, ছুটোছুটি আর সাগরের পানিতে আনন্দ গোসল, নাগরিক জীবনের চাপ ঝেড়ে প্রকৃতির সাথে মিতালির চেষ্টা ভ্রমনপিপাসুদের।
কক্সবাজার এখনও কমেনি পর্যটকের ঢল। অবকাশ কাটাতে ছুটে যাওয়া মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে সরগরম এই পর্যটন শহর। ফলে হোটেল-মোটেল ব্যবসাও এখন বেশ চাঙ্গা। আবারও চিরচেনা রূপে কক্সবাজার। হাজারও পর্যটকের ঢলে মুখর বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। বিপুল পরিমান পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে। যার ফলে পাণের সঞ্চার হয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
শুক্রবার বিকেলে সৈকতের লাবণী, সি-ইন ও কলাতলী পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের কয়েক কিলোমিটারজুড়ে লাখো পর্যটকে ভরপুর। সাগরে নিজেকে সপে দিয়ে সব ক্লান্তি যেন ভুলে গেছে তারা। এ যেন নারী-পুরুষ-শিশুর অপূর্ব মিলনমেলা। ঢেউতে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে অসংখ্য পর্যটক। তাদের আনন্দ উচ্ছ্বাসে মুখরিত সাগর তীর।
কক্সবাজারে এখন ভিড় করছে হাজার হাজার পর্যটক। কেবল দেশী পর্যটক নয়, বিদেশি পর্যটকদেরও পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজার।
হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রে নেমে গোসলে ব্যস্ত। কেউ কেউ স্পীডবোট ও জেটস্কিতে চড়ে সমুদ্র ভ্রমণে আনন্দ খুঁজছেন। আবার অনেকেই সমুদ্রের তীরে চেয়ার-ছাতার নীচে কিংবা বালির ঢিবিতে বসে চুটিয়ে আড্ডা মারছেন। কেউ কেউ ঝাউবাগানে বসে স্মৃতির সেলুলয়েডে নতুন স্বপ্ন বুনছেন। কেউবা মেতে আছেন জলক্রীড়ায়। নানা রঙের, আকারের ও বাহারের এই বৈচিত্র্যময় মিলনমেলায় দেখা যায় বিভিন্ন বয়সের লোকদের। তবে এদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য অংশ ছিল তরুণ-তরুণীরা।
তাছাড়া আগত পর্যটকেরা ছুটে যাচ্ছে সেন্টমার্টিনের স্বচ্ছ নীলাব পানি, অসংখ্য কোরালের ছড়াছড়ি, সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য ও সমুদ্র ঘেরা পাহাড় ও নদী সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে সাগরপাড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে পর্যটকেরা।জেলার পর্যটন স্পট মহেশখালী, আদিনাথ মন্দির, ডুলহাজারা সাফারী পার্ক, ইনানী পাথরের সৈকত, হিমছড়ি ঝর্ণা, কক্সবাজার ইনানী মেরিন ড্রাইভ সড়ক, রামুর বৌদ্ধ মন্দির, টেকনাফ সৈকত, সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া দ্বীপ আর বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত জুড়ে দেশী বিদেশী পর্যটকদের আবাধ ভ্রমণে মুখরিত পর্যটন স্পটগুলো।
চলতি ফেব্রুয়ারীতে কক্সবাজারে শুক্রবারই সর্বোচ্চ পর্যটক এসেছে বলে জানান কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার।
মাহবুবুল আলম নামে এক পর্যটক জানান, আমি বাংলাদেশি হলেও ১৪ বছর ধরে স্বপরিবারে ইংল্যান্ডে থাকি। আমরা সেখানকার নাগরিক। ১৪ বছর পর কক্সবাজার সাগর পাড়ে বেড়াতে এসে অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হয়েছে। বেড়াতে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
ঢাকা থেকে আসা রবিউল ইসলাম নামে আরেক পর্যটক জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার দেখতে এসেছি। শান্ত আকাশ। প্রশান্ত মন। সব কিছু ভাল লাগছে।
পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ জানান, পর্যটকদেরকে ছিনতাই, হয়রানী থেকে রক্ষা ও নিরাপত্তা বিধানে পুলিশের একাধিক টহল টিমের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ ও প্রশাসন কাজ করছে।