সদর উপজেলার পিএমখালীর কৃষির প্রাণ খ্যাত পাতলী খাল খননে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার বিএডিসি’র কর্মকর্তা এবং স্থানীয় চাঁদাবাজ যৌথ সমন্বয়ে ২২ লাখ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের। কাজে অনিয়ম ও প্রতারণার কারণে স্থানীয় কৃষকরা খাল খনন বন্ধ করে দেওয়ার পর পুনরায় খাল খননের নাম করে টাকা আত্মসাতের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় সাধারণ মানুষ। তদারকী কর্মকর্তার সাথে আঁতাত করে পুকুর চুরি করছে বলে জানা গেছে। পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন মেম্বার ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তাফা আলাল জানান, পিএমখালী ইউনিয়নের ২ হাজার হেক্টর জমি কৃষি নির্ভর করে পাতলী খালের সেচ ব্যবস্থাপনার উপর। পাতলী খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মওসুমে পানি জমাট না থাকায় চাষাবাদ প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ে। স্থানীয় কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল পাতলী খালটি পুনঃ খননের।
সরকার কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে পাতলী খালটি পুনঃ খননের বাজেট প্রদান করে। ৪ কিলোমিটার খাল খননের জন্য টেন্ডার ও হয়। টেন্ডার বাগিয়ে নেয় টেকনাফের যুবলীগ নেতা পরিচয় দানকারী আবুল কালাম। গত সপ্তাহে আবুল কালাম ২ কিলোমিটার পাতলী খাল খননের কাজ শুরু করে। শুধুমাত্র খালের উপরিভাগে সামান্য মাটি তুলে কাজ সেরে চলে আসতে চাইলে স্থানীয় লোকজন বাধা প্রদান করে। স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদুল হক জানান, এটি খাল খননের নামে প্রতারণা। মাটি না কেটে ঠিকাদার আবুল মাত্র ৫০ হাজার টাকার মত কাজ করে বাকি সাড়ে ১১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। কাজের অনিয়মের কারণে স্থানীয় আ’লীগ নেতারা কাজ বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদারকে বলার পরও ঠিকাদার সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দায়সারা ভাবে খাল খনন করে যাচ্ছে। কৃষকদের এবং স্থানীয়দের কোন কথা শুনছে না বলেও কৃষকদের দাবী।
অপরদিকে পাতলী খালের অবশিষ্ট ২ কিলোমিটার খাল খননের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার কোনদিন খনন কাজ স্থলে যায়নি। কুমিল্লার একজন লোক বিএডিসির কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ১১ লাখ টাকার কাজ হাতিয়ে নেয় এবং কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেন ঐ বিএডিসির কর্মকর্তাদের। ফলে কাজে অনিয়ম ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় খাল খননকে পিএমখালীবাসীর সাথে প্রতারণা বলে আখ্যা দিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। কাজের নানা অনিয়ম ঠিকাদার আবুল কালামের কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ বিষয়ে কক্সবাজার কৃষি উন্নয়ন প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারি প্রকৌশলী ডালিম কুমার বড়ুয়া জানান, খাল খনন করতে গিয়ে স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের বাধা অব্যাহত রয়েছে। ২ দিন আগে নেতারা কাজ ও বন্ধ করে দিয়েছিল আমরা পুনরায় শুরু করেছি। কাজে অনিয়ম বিষয়ে তিনি কিছু বলতে নারাজ। প্রদানকারী আবুল কালাম কে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘যোগাযোগ’ করবেন বলে মোবাইল কেটে দেন।
পিএমখালীর চাষাদের প্রধান বাহন পাতলী খালটি খননে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান কৃষকরা। অন্যথায় ২ হাজার হেক্টর কৃষি, সবজি চাষ সহ উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে।