সদরের ঈদগাঁওর পোকখালীতে অটোরিক্সা ছিনতাই করতে চালককে খুন করেছে ছিনতাইকারীরা। ছিনতাইকৃত রিক্সা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ৩ ঘাতককে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় খুনীদের ফাঁসির দাবীতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। ২২ জানুয়ারী শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে পোকখালী-ইসলামপুর উপকূলীয় সড়কের সীমান্ত সাদা ঘোনার মইগ্যারজুম নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উক্ত এলাকায় এক লোক খুনের সংবাদে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়া ও এসআই জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে পুলিশ দল খুনীদের গ্রেফতারে তাৎক্ষনিক সম্ভাব্য স্থানে অভিযান শুরু করে। রাত ১২টার দিকে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের করাচি পাহাড় নামক গ্রাম্য রাস্তা দিয়ে ছিনতাইকৃত রিক্সা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ৩ খুনীকে গ্রেফতার করে। ৩ ঘাতক হচ্ছে পোকখালী ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার রাজু ফকিরের ছেলে আজহারুল ইসলাম পুইত্যা (১৯), পার্বত্য আলী কদম উপজেলার ছত্র পাড়ার বালেশ্বর ত্রিপুরার ছেলে প্রীতি ত্রিপুরা (১৮) ও একই এলাকার চিতাং ত্রিপুরার ছেলে মতি ত্রিপুরা (২০)। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক পুলিশ রাত সাড়ে ২ টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিহত পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম পোকখালী সুলু বুইন্যা গ্রামের মৃত আমির আলী প্রকাশ ওবাইদুল্লাহর ছেলে ওমর ফারুক (২৬) এর লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী ঈদগাঁও পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর আলম খুনীদের আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে আটককৃতরা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে খুনের বর্ণনা। নিহত রিক্সা চালককে ময়না তদন্তের জন্য রাতেই মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের ভাই আবুবক্কর ছিদ্দিক জানান, তার ভাই এর রিক্সাটি উক্ত খুনীরা ঘটনার দিন কয়েক দফা ভাড়া নিয়ে যাত্রী বেশে রাতে উপকূলীয় সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে চলন্ত অবস্থায় পেছন দিকে ধারালো অস্ত্রে আঘাত করে নির্মমভাবে খুন করে। সে গভীর রাতেও না ফেরাতে বিভিন্ন স্থানে খুঁজাখুজি করেও সন্ধান পায়নি। পরে রাতে খুনীরা আটকের পর তাদের স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে গেলে তারা পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পায়। এদিকে খুনীদের আটক স্থলের লোকজন জানান, ঐ এলাকার কিছু যুবক তাদের পূর্ব নির্ধারিত মাহফিল আয়োজনের প্রস্তুতি সভা করছিল রাতে। ঐ সময় হঠাৎ সড়ক দিয়ে অটোরিক্সা যেতে দেখে তাদের সন্দেহ জাগে। এতে যাত্রীদের চ্যালেঞ্জ করলে মুখোশ পরিহিত যাত্রীরা অসংগতিপূর্ণ কথাবার্তা বলে এবং তাদের শরীরে রক্ত দেখে ধরে ফেলে ঈদগাঁও পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাদের নিয়ে যায়। অটোরিক্সা চালক খুনের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিক, এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা খুনীদের শাস্তির দাবীতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ঈদগাঁও পুলিশকে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বাজারের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করতে থাকে। পুলিশের অনুমতি নিয়ে তারা ঈদগাহ হাইস্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এসময় বিক্ষুদ্ধ জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক ফিরোজ আহমদ। ওসি তদন্ত বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী, সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হক রিকুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। একই দিন শনিবার বাদে আসর ওমর ফারুকের লাশ পশ্চিম পোকখালী মালমুরা পাড়া হেফজখানা মাঠে নামাজে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।