মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের মংডুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আবারও পোলিও রোগীর সন্ধানে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ৩ উপজেলা টেকনাফ উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়িতে রেড এলার্ড জারী করা হয়েছে। আরাকানের মংডুতে পোলিও রোগী সনাক্ত হওয়ায় পোলিও মুক্ত বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) পক্ষ থেকে বিশেষ সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সীমান্ত সংলগ্ন উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ০ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ২ লক্ষাধিক শিশুকে মপ-আপ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ২ ফোটা করে পোলিও টিকা খাওয়ানো হচ্ছে। মপ-আপ ক্যাম্পেইনের প্রথম দিনই টেকনাফ উপজেলার ১৪টি অতিরিক্ত কেন্দ্রসহ ১৬৪টি কেন্দ্রে ৫৬ হাজার ৯৮৪ জন টার্গেটভুক্ত শিশুর মধ্যে ৫৫ হাজার ১২৬ জন শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প, চেক পোস্ট, স্থল বন্দর পর্যটকদের জাহাজ ঘাট এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট পয়েন্টে পোলিও টিকা খাওয়ানো হচ্ছে। বর্তমানে ৪ দিন “শিশু শিশু প্রতি শিশু-খুঁজে ফেরো প্রতি শিশু” শ্লোগানে বাদ পড়া শিশু অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে স্বাস্থ্য কর্মীরা তলাশী চালাচ্ছে যাতে কোন শিশু বিশেষ টিকা কার্যক্রম থেকে বাদ না পড়ে। ব্যাপক নিবিড় তলাশী অভিযানের মাধ্যমে বাদ পড়া সব শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে। পরিবার পরিকল্পনা, এনজিও সংস্থা শেড, সুর্যের হাসি ক্লিনিক, ব্রাক, হিতৈষী বাংলাদেশ, পিএইচডি ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীদের সহযোগিতায় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাতে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে। টেকনাফ ৫০ শয্যা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আতাউর রহমান ২৬ জানুয়ারী দুপুরে উক্ত তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের পর থেকে বাংলাদেশে পোলিও মুক্ত অবস্থা বজায় রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়ার ১১টি দেশকে পোলিও মুক্ত ঘোষণা করেছিল। সম্প্রতি মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু টাউনশীপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) “সার্কুলেটিং ভ্যাকসিন ডিরাউভ পোলিও (সিভিডিপি) টাইপ-২” দ্বারা আক্রান্ত ২ জন রোগীর সন্ধান পেয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য অতি ঝুঁকিপুর্ণ। এমতাবস্থায় মিয়ানমার সরকার জানুয়ারী ও ফেব্রয়ারী ২ মাস বিশেষ পোলিও টিকা কার্যক্রম পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মংডু জেলার সীমান্ত সংলগ্ন উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সপ্তাহ ব্যাপী বিশেষ ইপিআই কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এই মপ-আপ ক্যাম্পেইনের ১ম রাউন্ড ২৩ জানুয়ারী শুরু হয়ে ২৭ জানুয়ারী শেষ হবে। ২য় রাউন্ড ২৭ ফেব্রæয়ারী শুরু হয়ে ২ মার্চ সমাপ্ত হবে।