কক্সবাজার পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কের ম্যানহোল এবং কালভার্ট এর স্লেপ ভেঙ্গে রাস্তার মাঝখানে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। অনেক গর্ত এভাবে পড়ে আছে ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে তবুও তা মেরামত করার উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। অথচ এসব ভাঙ্গা ম্যানহোল এবং কালভার্ট স্লেপের কারণে প্রতিদিন ছোট বড় অনেক দূর্ঘটনা ঘটছে। ্ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলেও জানা গেছে। বিশেষ করে পর্যটকের গাড়ী এসব ভাঙ্গা রাস্তাতে পড়ে যায় বলে জানা গেছে। সচেতন মহলের প্রশ্ন কর্তৃপক্ষ কি আরো বড় ধরণের দূর্ঘটনার জন্য অপেক্ষা করছে ?
কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া ৪ নং ওয়ার্ডের আমেনা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রেহেনা বেগম বলেন, স্কুলের সামনে ৩/৪ টি ম্যানহোলের স্লেপ বেশ কয়েক মাস ধরে খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এতে খুব আতংক নিয়ে স্কুলে আসে শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে বর্ষার সময় পানি যখন রাস্তার উপর দিয়ে চলাচল করে তখন রাস্তা আর নালা বুঝা যায় না, তখন ম্যানহোল খোলা থাকার কারণে সবার ভেতরে আতংক থাকে কখন নালাতে পড়ে যায়। আমার চুখের সামনে বেশ কয়েকটি রিক্সা খোলা থাকা সে সব স্লেপে পড়ে যেতে দেখেছি। এতে বেশ কয়েক জন আহতও হয়েছে। স্থানিয় বাসিন্দা ছাত্রনেতা শাহিনুল ইসলাম বলেন, আমার জানা মতে কিছু দিন আগে ময়লা পরিস্কার করার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ স্থানিয় কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে সে সব নালার স্লেপ খুলেছে কিন্তু সে সব স্লেপ আর ঠিকমত লাগানো হয় নি। এটা মোটেও উচিত হয়নি। পানি না থাকলেও অনেকে রাতের বেলায় সে সব খোলা ম্যানহোলে পড়ে যায়। কিছু দিন আগে আমার এক প্রতিবেশি মহিলা সেখানে পড়ে আহত হয়েছে। তবে এখন বোধয় কিছুটা ঢেকে দেওয়া হয়েছে তবে সেটা ও সঠিক হয় নি।
এ ব্যাপারে ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল হক বলেন, নালা ঠিকমত পরিস্কার করার জন্য স্লেপ খোলা হয়েছে এবং পরে সেটা আবার লাগানো হয়েছে। একটি বা দুটি খোলা থাকলেও তা আজ কালের মধ্যে লাগিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে কক্সবাজার স্টেডিয়ামের রাস্তার মাথায় দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কালভার্টের স্লেপ ভেঙ্গে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। এই রাস্তা দিয়ে সাধারণ মানুষ এবং দৈনিক কয়েক হাজার গাড়ী চলাচাল করে সবাই সে সব গর্তের কাছে আসতেই খুবই আতংক নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য শাহিনুল হক মার্শাল বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। রাস্তাটি একটি মুর্তিমান আতংক। বিশেষ করে পর্যটকরা রাস্তায় যে গর্ত আছে সেটা জানেনা তাই তাদের গাড়ী প্রায় এখানে দূর্ঘটনায় পড়ে। কয়েকদিন আগে রাত ৯ টার দিকে আমার সামনেই পর্যটকদের একটি কার ভাঙ্গা কালভার্টের গর্তে পড়ে গেছে এতে তার গাড়ীরতো ক্ষতি হয়েছে সাথে গাড়ীর ভেতরে থাকা একজনের মাথায় আঘাত পেয়েছে। পরে আমরা সবাই গিয়ে তাদের উদ্ধার করেছি। তিনি বলেন এটা শহরের অন্যতম একটি ব্যস্ততম সড়ক, এখানে একটি নয় ৩/৪ টি এধরনের গর্ত এটা মেনে নেওয়া যায় না।
স্থানিয় ব্যবসায়ি মেজবাহ উদ্দিন কবির বলেন, রাস্তার গর্তগুলো আসলেই আতংকজনক। এখানে প্রতিদিনই কোন না কোন দূর্ঘটনা ঘটে। পরে ব্যবসায়িরা গর্ত সনাক্ত করার জন্য একটি বাঁশ সেখানে কুপে দিয়েছে। এর ফলে দূর্ঘটনা অনেক কমেছে। আমরা এই রাস্তা দ্রুত সংস্কারের দাবী জানাচ্ছি। শহরের পেশকার পাড়া এলাকার বাসিন্দা আসরাফুল আলম বলেন, আমি গত সপ্তাহে রাতে মটর সাইকেল নিয়ে আসার সময় স্টেডিয়াম রাস্তার মোড়ে গর্তে পড়ে গেছি। পরে পরে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গিয়ে চিকিৎসা নিয়। এবং মটর সাইকেলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে টেকপাড়া, খুরুশকুল সড়ক, রুমালিয়ার ছড়ার বেশ কয়েকটি সড়কে রাস্তার ম্যানহোল এবং কালভার্টের শ্লেপ ভেঙ্গে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে বলে জানান স্থানিয়রা।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহাবুবুর রহমান বলেন, পৌর এলাকার সব রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।
অনলাইন ডেস্ক :