প্রবাল দ্বীপ ও টেকনাফ উপজেলার সর্বশেষ ভূখন্ড ৬ নং সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। প্রার্থীদের পদভারে মূখরিত গোটা দ্বীপের গ্রামাঞ্চল। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুঁটছেন প্রার্থীরা।
এবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন এবং যাচাই-বাছাইয়ে প্রার্থীতা বাতিল ও স্বেচ্ছায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে সবাই লড়াই করছেন। এ দ্বীপ ইউনিয়নে ৩৯ জন প্রার্থী স্ব-স্ব ওয়ার্ড, সংরক্ষিত আসন ও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তম্মধ্যে ৯ জন সংরক্ষিত ও ৩০ জন সাধারন আসনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। বলতে গেলে সব প্রার্থীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ২২ মার্চের ভোটের দিনক্ষন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই মাঠে ও ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী উত্তাপ বেড়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো সেন্টমার্টিন পোস্টারে ছেয়ে গেছে। কোথাও জায়গা খালি নেই। আর বিকাল হলে প্রার্থীদের প্রচারনার মাইকের গাড়ির আওয়াজে পুরো ইউনিয়নে উৎসবের আমেজ চলে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৯৪ ভোট। এই ইউনিয়েন আওয়ামীলীগের মনোনিত নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, বিএনপি মনোনিত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আবদুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নুর আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক চেয়ারম্যান মাওঃ ফিরোজ আহমদ খানের ছেলে টেলিফোন প্রতীক নিয়ে সংবাদকর্মী কেফায়েত উল্লাহ খাঁন ও আনারস প্রতীক নিয়ে আবদুর রহমান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে টেলিফোন প্রতীকের প্রার্থী কেফায়েত উল্লাহ খানের পিতা মাওঃ ফিরোজ আহমদ খাঁন ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় পাল্লা ভারি।
অপরেিদক প্রার্থীরা প্রত্যেকে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভিন্নভিন্ন প্রতিশ্রুতি আর উন্নয়নের কথা তুলে ধরে ভোট চাইছেন। দেশের সর্ব দক্ষিনে অবস্থিত সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীক প্রার্থী এবং স্বতন্ত প্রার্থী নুর আহমদের সাথে ত্রি-মুখী লড়াইয়ের কথা শোনা যাচ্ছে। তবে এই মুহুর্তে ধানের শীষ এগিয়ে রয়েছে বলে জনসাধারনের মুখে শুনা যাচ্ছে। তার পাশাপাশি মোটর সাইকেল প্রতীকের প্রার্থীর কথায় জনসাধারণের মুখে বেশি শোনা যাচ্ছে। একাধিক ভোটারগন জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী নুর আহমদ মোটর সাইকেল প্রতীক প্রার্থীর পাল্লা বেশ ভারী হয়েছে। আর সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক প্রার্থীর সংগে মোটরসাইকেল ও ধানের শীষ প্রতীক প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর খুঁটির জোর বেশ ভাল। সাধারণ ভোটারদের মুখে শোনা যাচ্ছে এই ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়াই হবে। ইউনিয়নের হাট-বাজারের চা দোকান ও হোটেলে সাধারণ ভোটারদের মাঝে পছন্দের প্রার্থীদের সমর্থকরা পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে নিজ প্রার্থীর জয়ের কথাই বলছে। গ্রামে-গঞ্জে প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, আলোচনা সভা আর মাইকিং প্রচারনায় সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের নির্বাচন জমে উঠেছে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রর্থী নৌকা প্রতীকের মুজিবুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর সালাম নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে নৌকার ভোট ভিক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করছি। আশা করি সবঠিক থাকলে আমি শতভাগ আশাবাদী, ইনশাল্লাহ বিজয়ী হবো।
ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা আবদুর রহমান জানান, জনগনের আশা নিরাশার মানুষ হিসেবে আমি দীর্ঘদিন দ্বীপবাসীর সাথে রয়েছি। ভোটারদের অব্যাহত ভালবাসা পেলে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনিই বিজয়ী হবেন। তিনি অবাধ, সূষ্টু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন। তিনি সূষ্টু ভোট গ্রহনের জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্থক্ষেপ কামনা করেন।
নির্বাচনী প্রচারনা ও সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে কথা বলে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুর আহমদ জানান, তিনি দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত রাজনীতিবীদ ও সমাজসেবক হিসেবে জনগণের দরজায় রয়েছি। সেই জন্য জনগন আমাকে নিরাশ না করে মোটর সাইকেল মার্কায় ব্যলটের মাধ্যমে নিরব বিপ্লব ঘটিয়ে আমার বিজয় ছিনিয়ে আনবে।