জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষার স্বার্থে নববর্ষ উদ্যাপনের দিন পয়লা বৈশাখে ইলিশ মাছ খাবেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষার স্বার্থে নববর্ষ উদ্যাপনের দিন অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ ১৪২৩-এর খাদ্যতালিকায় ইলিশের কোনো আইটেম রাখছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে এ দিনের মেন্যুতে খিচুড়ির সঙ্গে থাকছে বেগুন ভাজি, ডিম ও মুরগির মাংস ভুনা।
বাঙালির কাছে ইলিশের গুণকীর্তন নতুন করে করার কিছু নেই। নতুন হলো, বৈশাখ বরণ উপলক্ষে চারপাশে যে সাজ সাজ রব, তার সঙ্গে ইলিশের যোগ। সে কারণেই মাস তিনেক হিমাগারে কাটিয়ে বাজারে আসা বরফচাপা ইলিশের দর এখন চৈত্রের খরতাপের চেয়েও চড়া। সাধারণ লোকের পক্ষে তার গায়ে হাত দেওয়া অসম্ভব।
এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকায়। ওজনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দাম। দুই কেজি ওজনের ইলিশ ঘরে আনতে হলে গুনতে হবে ন্যূনতম ছয় হাজার টাকা। তবে তেমন ক্রেতারও অভাব নেই। দরদাম যা-ই হোক, ইলিশ বিকোচ্ছে প্রচুর।
অনেকে পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়াকে হাল আমলের ‘হুজুগ’ বলে মন্তব্য করেছেন। ইলিশের উচ্চমূল্য ও এর প্রজনন মৌসুম চলায় বিভিন্ন মহল থেকে আহ্বান আসছে পান্তা-ইলিশের রেওয়াজ পরিহারের জন্য। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে পান্তা-ইলিশের বিপক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরছেন। সরকারের কয়েক মন্ত্রী এরই মধ্যে পয়লা বৈশাখে ইলিশ খাওয়াকে নিরুৎসাহিত করেছেন। এরই মধ্যে আজ প্রধানমন্ত্রী পয়লা বৈশাখে ইলিশ খাবেন না বলে ঘোষণা এল।
এই উৎসবের সঙ্গে ইলিশের যোগ কেমন করে ঘটল—এমন প্রশ্নের বিষয়ে ফোকলোর বিশেষজ্ঞ বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, অতীতে পয়লা বৈশাখের সঙ্গে ইলিশের কোনো সম্পর্কই ছিল না। এটি একেবারেই হাল আমলের হুজুগ।
ইলিশ বিশেষজ্ঞ চাঁদপুরের মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এখন জাটকা ইলিশের বড় হওয়ার মৌসুম। গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ।