অবশেষে কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার বিভাগের সেই উপ-পরিচালক খোকন ঘোষ নিজেই ঠিকাদারী কাজে নেমেছেন। বেশ কয়েকজন শ্রমিক লাগিয়ে রাত-দিন তড়িঘড়ি করে সীমানা দেয়াল সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গত বুধবার রাত থেকে এ কাজ শুরু হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ৪/৫ জন শ্রমিক ধসে পড়া পুরনো সীমানা দেয়ালটি ভেঙ্গে লোহা ও ইট তুলে নেয়ার কাজ করছেন। দু’একজন শ্রমিক পুরনো ইটগুলো কংকর ভাঙ্গায় ব্যস্ত। শ্রমিকরা জানান, কৃষি অফিসের লোকজন তাদের নিয়োগ করেছে।
সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির উপ-পরিচালক খোকন ঘোষ গোপনে মাসুদ আলম নামের এক ঠিকাদারের নামে সীমানা দেয়ালটি সংস্কারের কাজ করছেন। বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প নামের একটি প্রকল্পের টাকায় কোটেশনের মাধ্যমে সীমানা দেয়ালটি সংস্কার করা হচ্ছে। ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সীমানা দেয়ালের কথা থাকলেও কাজ শুরু করা হয়েছে মাত্র ১২০ ফুটের। তাও ওই দেয়ালের পুরনো লোহা ও ইট তুলে সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সীমাহীন অনিয়মের মাধ্যমে এক ঠিকাদারের লাইসেন্সে কাজটি করছেন খোদ উপ-পরিচালক খোকন ঘোষ। এছাড়া সরকারী এ দপ্তরের বিভিন্ন অবকাঠামো সংস্কার ও নির্মাণ কাজের টেন্ডার না করে গোপনে কোটেশনের মাধ্যমে ইতিপূর্বে লাখ লাখ টাকার কাজ করে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার বাস টার্মিনালের পাশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘নারিকেল বাগান’ এর ধ্বসে পড়া বাউন্ডারী নির্মাণ ও সংস্কার কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ওই কাজের জন্য টেন্ডার না করে গোপনে কোটেশনের মাধ্যমে নিজেই কাজ করে নেয়ার পাঁয়তারা করেন খোদ উপ-পরিচালক নিজেই। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করে জানান, কর্তৃপক্ষ কোন নোটিশ বা ঘোষনা ছাড়াই এসব সরকারী কাজ নিজেরা করে বিল-ভাউচার বানিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে। এমনকি ওই বাউন্ডারির ধ্বসে পড়া নির্মাণ সামগ্রী কাজে লাগিয়ে বেশি বিল তুলে নেয়ার পরিকল্পনাও গ্রহন করা হয়। ইতিপূর্বেও সেখানে এ ধরণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদাররা। এ সংক্রান্ত বিষয়ে গত ২৭ জানুয়ারী দৈনিক সকালের কক্সবাজার পত্রিকায় ‘ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাই ঠিকাদার!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তখন অভিযোগের বিষয়ে কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার বিভাগের উপ-পরিচালক খোকন ঘোষ বলেছিলেন, ‘এসব ছোট-খাট কাজ আমরা নিজেরাই করবো। ঠিকাদারদের এসব কাজ দেয়ার দরকার নেই।’