রামুর দূর্গম গর্জনিয়া ইউনিয়নে মুক্তিপণের জন্য অপহৃত দুই সহোদর কিশোরকে হত্যার ঘটনায় আটক ১২ জনের মধ্যে ৮ জনকে পুলিশ হেফাজতে (রিমান্ড) এনে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। তাদের ৫ দিনের পুলিশী হেফাজত মঞ্জুর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক ১২ জনের মধ্যে ৯ জনকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের হেফাজতে আনার আবেদন করে রামু থানা পুলিশ। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ নিশাদুজ্জামান ৮ জনের ৫ দিন করে পুলিশী হেফাজত মঞ্জুর করেন। তবে আটক অন্য এক মহিলা বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় তাকে হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
রামু থানা পুলিশ জানিয়েছেন, ধৃত ১২ জনের মধ্যে অপর তিনজনকে যে কোন সময় আদালতে হাজির করে পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হবে।
পুলিশী হেফাজত (রিমান্ড) মঞ্জুর হওয়া ৮ জন হলেন রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বড়বিল এলাকার আব্দুস শুক্কুরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, মৃত মোহাম্মদ নবীর ছেলে ইমাম হোসেন ওরফে টুইল্যা, আমির হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন, মো. আব্দুল্লাহ, মো. ইউনুস, রুমান উদ্দিন ওরফে নোমান, লাইলা বেগম ও রশিদা বেগম।
ফাতেমা খাতুন বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় রিমান্ড থেকে নিস্কৃতি পেয়েছেন।
রামু থানার পরিদর্শক (তদন্ড) মোহাম্মদ কায়কিসুলু এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গর্জনিয়ার বড়বিল এলাকার দুই সহোদরকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় ১২ জনকে আটক করেছিল পুলিশ। এদের মধ্যে ৯ জনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশের পক্ষে এদের হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়। আদালত ৮ জনের ৫ দিন করে হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা কায়কিসুলু জানান, ধৃত অপর ৩ জনকে যে কোন সময় আদালতে হাজির করা হবে।
তার মতে, এই ঘটনায় অপহরণে দায়ে দায়ের করা মামলাটি নিয়মিত হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। এসব মামলায় আটকদের আসামি দেখানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১৭ জানুয়ারি বোরবার বিকালে বাড়ির পাশে খেলা করার সময় মোহাম্মদ ফোরকানের বড় ছেলে মোহাম্মদ ইমাম হাসান ওরফে শাকিল (১০) ও মোহাম্মদ ইমাম হোছাইন ওরফে কাজলকে (৮) অপহরণ করা হয়। পরে তাদের অভিভাবকদের কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কিন্তু মুক্তিপণ দিতে না পারায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে ওই দুই কিশোর সহোদরকে শ^াসরোধ করে হত্যা করা হয়। পুলিশ জনতার সহায়তায় গর্জনিয়ার বড়বিলের কাছাকাছি পাহাড়ি এলাকার একটি ফলের বাগানা থেকে দুই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে।
নিহত হাসান শাকিল বাইশারী শাহ নুরুদ্দিন মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণী ও হোছাইন কাজল বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল।