চকরিয়ায় যাত্রীবাহি ইউনিক পরিবহনের একটি বাস ও টাটা ম্যাজিক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আগামী ১১ মে প্রকাশিতব্য এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রার্থী আহাদুল ইসলাম (১৮) নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত চালকদের গ্রেফতার পুর্বক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে একই বিদ্যালয়ের শত শত সহপাঠি শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া শহরের নিউ মার্কেটের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এসব শিক্ষার্থীরা। ওইসময় দুপুর ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী অবরোধ চলাকালে সড়কের উভয় দিকে অন্তত তিন শতাধিক যাত্রী ও পন্যবাহি গাড়ি আটকা পড়ে।
এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী সাধারণ। বিক্ষোভ চলাকালে থানা পুলিশের একটিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের নিবারণের চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসুচী চলবে বলে ঘোষনা দেন বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অনড় আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দুপুর একটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁেছন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল, চকরিয়া), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জহিরুল ইসলাম খাঁন ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.কামরুল আজম এবং বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এনামুল হকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। ওইসময় তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার পুর্বক আইনের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অনুরোধ অবরোধ কর্মসুচী প্রত্যাহার করেন। পরে শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে যানবাহন চলাচল ফের স্বাভাবিক হয়।
প্রসঙ্গত: আগের দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার রিংভং নতুন মসজিদ এলাকায় যাত্রীবাহী ইউনিক পরিবহনের বাস ও টাটা (ম্যাজিক) গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনা গ্রামের শিব্বির আহমদের ছেলে চকরিয়া বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রার্থী আহাদুল করিম (১৮), ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহল গ্রামের আহমদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ তারেক (১৮), একই ইউনিয়নের সুয়াজনিয়া এলাকার বাহাদুর আলমের স্ত্রী নুর নাহার বেগম (৪৪) ও তার মেয়ে স্থানীয় রিংভং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রৈনীর ছাত্রী আয়েশা বেগম (১৩) এবং ও কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার মৃত মিয়া আজমের ছেলে আবু ছৈয়দ (৬৫) সহ পাঁচ যাত্রী।
চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো.কামরুল আজম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের আইসি এসআই মো.আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি মামলা রুজু করেছেন। মামলাটিতে আসামি করা হয়েছে ইউনিক পরিবহনের বাস চালককে।