চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের শান্তিবাজার এলাকায় চুরির অপবাদে নির্মমভাবে দোকান কর্মচারী শিশু রিয়াজ উদ্দিন খুনের ঘটনায় অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ঘাতকদের দাবি অনুযায়ী বিষপানে ওই শিশু আত্মহত্যা করেছে মর্মে চালানো অপপ্রচারের পক্ষেই সাফাই গাইতে শুরু করলেও শেষপর্যন্ত মামলা নিতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। তবে এ সুযোগে ঘাতকসহ পরিবারের সদস্যরা এলাকায় ঘুরলেও তাদের গ্রেপ্তার করছেনা বলে পরিবারের অভিযোগ। এতে বাদীসহ শিশু রিয়াজের পরিবার সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, শনিবার দিবাগত রাত বারোটার দিকে শিশু রিয়াজের বড়বোন সাজেদা বেগম বাদী হয়ে এজাহার দিলে তা মামলা হিসেবে রুজু করা হয় থানায়। মামলায় ৩ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও আরো ৩-৪জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলাটি করা হয়।
মামলার এজাহারনামীয় আসামীরা হলেন আবদুল্লাহ আল হাসান প্রকাশ হাসান মুরাদ (৩২), তার বাবা দোকান মালিক আবদুস সালাম (৭০), অপর ছেলে আবদুল্লাহ আল হারেছ (২৮)।
মামলার এজাহারে বাদী সাজেদা বেগম দাবি করেছেন, তার ছোটভাই শিশু রিয়াজকে প্রতিনিয়ত দোকানে মারধর করতো আসামীরা। ঘটনার দিনও টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে দোকানে নির্মমভাবে নির্যাতন চালায় রিয়াজের ওপর। পেটে ও অন্ডকোষে আঘাতের কারণে মারা গেলে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে অপপ্রচার চালায় ঘাতকেরা।
শিশু রিয়াজের মা নুর আয়েশা ও বাবা নুরুল কবির অভিযোগ করেছেন, তাদের ছেলে রিয়াজকে পিটিয়ে মেরে ফেলার পর বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে ব্যাপকভাবে অপপ্রচার চালায় ঘাতক ও তাদের লোকজন। অন্যতম ঘাতক হাসান মুরাদের শ্বশুড় জঙ্গী সম্পৃক্তের অভিযোগ থাকা এক মৌলভী ও মামাশ্বশুড় যুবলীগ নেতা শিশু রিয়াজ বিষপানে আত্মহত্যা করেছে মর্মে অপপ্রচার ছড়ায়। এমনকি মামলা না করতে তাদেরকে কয়েক লাখ টাকার লোভও দেখায়।
মা-বাবার অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘটনার পর পরই আমরা পুলিশকে বলেছিলাম, ঘাতকদের গ্রেপ্তার করতে। কিন্তু তারা মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ হওয়ায় হত্যাকা-ে জড়িত একজনকেও গ্রেপ্তার করেনি। আসামীরা বর্তমানে এলাকায় ঘুরে-ফিরলেও তাদের গ্রেপ্তার না করায় চরম নিরাপত্তাহীনতা রয়েছি আমরা।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুল আজম বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাতে শিশু রিয়াজের বোন সাজেদা বেগম বাদী হয়ে এজাহার দিলে তা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়।’
মামলার আসামী গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শিশু রিয়াজের মৃত্যু নিয়ে তো একেক জন একেক কথা বলছেন, তার পরও পরিবারের পক্ষ থেকে এজাহার দেওয়ায় মামলা নেওয়া হয়েছে। এখন দেখা যাক, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কি আসে। তার পর আসামীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি পুলিশ চিন্তা করবে।’