কক্সবাজার রিপোর্ট : টেকনাফে সমুদ্র সৈকতের ঝাউ বাগান থেকে নির্বিচারে অর্ধ-লক্ষাধিক বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের। স্থানীয়দের অভিযোগ, বনকর্মিদের যোগসাজশে এক মাস ধরে নির্বিচারে গাছকাটা চললেও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টির ব্যাপারে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেননি। ঘটনাস্থলেও যাননি কোনো কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টরা। গতকাল বুধবার এ ব্যাপারে দৈনিক কক্সবাজারে সচিত্র সংবাদ প্রচারিত হলে নড়েচড়ে বসে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। গতকাল বুধবার বিকালে টেকনাফের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) সরওয়ার আলমের নেতৃত্বে বন বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর, জাহাজপুরা ও শিলখালী এলাকায় সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন ঝাউ বাগানের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বলে জানান কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ কর্মকর্তা মো. আলী কবির। তিনি বলেন, দূর্বৃত্ত কর্তৃক ঝাউ গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে সাথে সাথে টেকনাফের সহকারি বন সংরক্ষককে (এসিএফ) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলেছি। ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদন হাতে পেলে দায়ী ব্যক্তিদের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বন বিভাগ কর্মকর্তা আলী কবির। তিনি আরো বলেন, পত্রিকায় যে ছবি ছাপানো হয়েছে তা দক্ষিণ বনবিভাগের আওতায় পড়েনি। এটি শীলখালী সমুদ্র সৈকত এলাকার। যা উপকুলীয় বন বিভাগের আওতায় পড়ে। এদিকে কক্সবাজারে উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক জিএম মোহাম্মদ কবির কে বেশ কয়েকবার তার ফোনে কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর, জাহাজপুরা ও শিলখালীর পশ্চিমের সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকায় তিনটি ঝাউ বাগান থেকে এক মাস ধরে কয়েক হাজার কেটে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা। সৈকতের অন্তত আড়াই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কেটে নেয়া গাছের গোড়াগুলো নিধনের ভয়াবহতার স্বাক্ষ্য বহন করছে। স্থানীয়দের দাবি, ঝাউ বাগান থেকে গত এক মাসে অন্তত পঞ্চাশ হাজারের বেশী গাছ কেটে নিয়েছে দূর্বৃত্তরা। উপকূলীয় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় ২০০৬-০৭ সালে টেকনাফের বাহাছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর থেকে জাহাজপুরা পর্যন্ত ১০০ হেক্টর সৈকতের বালিয়াড়ীতে তিনটি বাগানে প্রায় ৫ লাখ ঝাউগাছ লাগায় উপকূলীয় বন বিভাগ। দৃষ্টিনন্দন এসব ঝাউ বাগান পর্যটকদের কাছে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূল রক্ষায়ও কাজ করে।