চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী দাবি করেছেন, ‘গণ্ডামারায় পুলিশের গুলিতে নয়, সন্ত্রাসীদের গুলিতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।’ আজ রোববার দুপুরে ‘বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন’ নিয়ে উপজেলা সদরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি করেন।
এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এসএস পাওয়ার লিমিটেড ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে গণ্ডামারা ইউনিয়নে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে। ৪ এপ্রিল গণ্ডামারার হাদিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে-বিপক্ষের লোকজন সমাবেশ ডাকেন। এ নিয়ে সংঘর্ষে দুই ভাইসহ চারজন নিহত হন।
মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সাংসদ বলেন, নিরপরাধ কারও শাস্তি হতে পারে না। যারা ঘটনায় ইন্ধন দিয়েছে, তাদের উপযুক্ত বিচার হতে হবে। বিদ্যুৎ প্রকল্পটি হলে এলাকার ক্ষতি হবে না বলে তিনি দাবি করেন। গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি দাবি করেন, সহজ-সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামানো হয়েছে। চারজন পুলিশের গুলিতে নয়, সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। সেদিন ১৪৪ ধারা জারি করা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। নইলে আরও মানুষের প্রাণ যেত।
তবে ঘটনার পর থেকে স্থানীয় লোকজন ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা দাবি করে আসছেন, পুলিশের গুলিতেই চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
মতবিনিময় সভার শুরুতে নিহত চারজনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। পরে এসএস পাওয়ারের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবস্থা তুলে ধরেন। প্রকল্পটি হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে না বলে তিনি দাবি করেন।
সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমেদ কায়কাউস বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হবে বলে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের কারণে চারজনের প্রাণহানি হলো। আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে; এতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না বলে তিনি দাবি করেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল, বাঁশখালীর ইউএনও মো. শামসুজ্জামান, সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি কামরুল হাসান, বাঁশখালীর উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল আলম, গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ উল্লাহ, এস আলম গ্রুপের পরিচালক শহীদুল আলম প্রমুখ।