পাকিস্তানি দূতাবাসের কর্মকর্তা আবরার আহমেদ খানকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশ সোমবার দুপুরের দিকে আটক করে। এর পরপরই বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সুজা আলম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানালে তাকে আশ্বস্ত করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় আবরারকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এরপরও রাত নয়টার দিকে দূতাবাস থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশে যখন এ ঘটনা চলছে, তখন ইসলামাবাদে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তাকে প্রায় সাত ঘণ্টা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়। বাংলাদেশের কর্মকর্তার আটক ও পাকিস্তান দূতাবাসের রহস্যজনক আচরণে ঢাকা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত সুজা আলমকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদলিপিও দেওয়া হয়।
দুপুর একটা থেকে দুটা পর্যন্ত বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খোরশেদ আলম এবং সচিব (দ্বিপাক্ষিক) মিজানুর রহমান সুজা আলমকে বাংলাদেশের অসন্তুষ্টির কথা জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের অসন্তুষ্টির দুটি বড় কারণ আছে। তিনি বলেন, সুজা আলমকে বলা হয়েছে, তার লোককে ছেড়ে দেওয়া হবে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করার পরেও তিনি কেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেন? বাংলাদেশের কর্মকর্তাকে কেন পাকিস্তানে আটক করা হলো? তিনি বলেন, সুজা আলমকে প্রথমে ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কেন তার লোককে আটক করেছিল? ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে—কয়েক মাস ধরে আববার বাংলাদেশের গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলেন। তার মোবাইল ফোন ট্র্যাক করা হতো।
মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে দেখা গেছে তিনি দিনের অধিকাংশ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতেন।
এছাড়া, ভিয়েনা কনভেনশন অনুসরণ করে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ একটি সার্কুলার জারি করে। যেখানে বলা আছে, যেকোনও ডিপ্লোম্যাটিক যান্ত্রিক বাহনের (গাড়ি, মোটরসাইকেল ইত্যাদি) ডিপ্লোম্যাটিক নম্বর প্লেট থাকতে হবে। কিন্তু তার মোটরসাইকেলের ডিপ্লোম্যাটিক নম্বর প্লেট ছিল না।
কর্মকর্তাটি বলেন আবরার বিষয়ে বলার পরে রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাকে আশ্বস্ত করার পরও তিনি কেন সংবাদবিজ্ঞপ্তি জারি করলেন? বাংলাদেশের কর্মকর্তাকে কেন আটক করা হলো—এ বিষয়েও তার কাছে জানতে চাওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সুজা আলম সাংবাদিকদের বলেন, ইসলামাবাদে বাংলাদেশি আটকের ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়েছে। আমি এ বিষয়ে খোঁজখবর নেব।