আঙুলের ছাপ নেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ করেছে হাইকোর্ট। তথ্যে গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন।
এর আগে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রবিবার রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ঠিক করে আদেশ দেন। গত ৪ মার্চ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিটিআরসি, আইন, স্বরাষ্ট্র এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ছয়টি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি এবং নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র বিভাগের মহাপরিচালককে আগামী সাতদিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এই রুলের ওপর ৩ ও ১০ এপ্রিল শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এওয়াই মশিহ উজ্জামান ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক। ৯ মার্চ রিট আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী এসএম এনামুল হক।
রিটের পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বিটিআরসি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের জন্য ৬টি মোবাইল কোম্পানির প্রতি সার্কুলার জারি করে। মোবাইল কোম্পানিকে দিয়ে এটা বিটিআরসি করতে পারে না। সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, জনসাধারণের নৈতিকতা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের- (ক) প্রবেশ, তল্লাশি ও আটক হইতে স্বীয় গৃহে নিরাপত্তালাভের অধিকার থাকিবে; এবং (খ) চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার থাকিবে।’ এছাড়া টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০১ এর ৩১ ধারার মধ্যে এটা পড়ে না। তাই সংবিধান ও এ আইন মতে এটা বেআইনি।
তিনি আরও বলেন, বিটিআরসি মাত্র ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ সিম নিয়ন্ত্রণ করেন। বাকি ৯৭.০২ শতাংশ বিদেশিরা নিয়ন্ত্রণ করেন। সুতরাং এখানে আমাদের নিরাপত্তা কী? আমরা বিদেশি বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ দিয়েছি। যেখানে আঙ্গুলের ছাপ অবৈধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় আঙুলের ছাপ না দিয়ে এখন আর নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুরনো সিমের পুনঃনিবন্ধন চলছে, যা ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনার কথা বলে আসছেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী।