২০১৬-১৭ মৌসুমে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিল (আইজিসি)। অনুকূল আবহাওয়ার এ সময়ে শস্য উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন সবচেয়ে বাড়তির দিকে থাকবে।
আইজিসি চলতি মাসের প্রতিবেদনে ২০১৬-১৭ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ২০৪ কোটি ৬০ লাখ টন শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে। এর আগের পূর্বাভাসে ২০০ কোটি টন শস্য উৎপাদনের কথা জানানো হয়েছিল। তবে গত মাসের চেয়ে চলতি মাসের প্রতিবেদনে আগামী মৌসুমে শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস বাড়ানো হলেও তা ২০১৫-১৬ মৌসুমের চেয়ে কমতির দিকে থাকবে। চলতি মৌসুমে বিশ্বব্যাপী শস্য উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ২০৪ কোটি ৭০ লাখ টনে।
আইজিসি ২০১৬-১৭ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ১০১ কোটি ৭০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে। এর আগে যেখানে শস্যটি উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল ১০০ কোটি ৩০ লাখ টন। অন্যদিকে ২০১৫-১৬ মৌসুমে ৯৬ কোটি ৮০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে শস্য উৎপাদন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ভুট্টার ফলন বাড়বে। সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬-১৭ মৌসুমে ১ কোটি টন বাড়িয়ে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।
আইজিসি চলতি মাসের পূর্বাভাসে আগামী মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ৭৩ কোটি ৫০ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। আগে যেখানে শস্যটি উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছিল ৭২ কোটি ৯০ লাখ টন। তবে ২০১৬-১৭ সালে গম উৎপাদনের পূর্বাভাস বাড়ানো হলেও তা চলতি মৌসুমের চেয়ে কমতির দিকে থাকবে। কেননা ২০১৫-১৬ মৌসুমে ৭৩ কোটি ৬০ লাখ টন গম উৎপাদনের প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগামী মৌসুমে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে অনুকূল আবহাওয়ায় গম উৎপাদন ভালো হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে এ সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় শস্যটির ফলন ব্যাহত হবে। এসব দেশে গম আবাদে জমির পরিমাণ বাড়লেও অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে শস্যটির গুণমান নষ্ট হবে, যা সার্বিক ফলন কমাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল ২০১৬-১৭ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ৩২ কোটি ১০ লাখ টন সয়াবিন উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। এর আগে একই সময়ে শস্যটি উৎপাদনের পূর্বাভাস ধরা হয়েছিল ৩২ কোটি টন। অন্যদিকে ২০১৫-১৬ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী শস্যটির উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৩১ কোটি ৬০ লাখ টনে। পরীক্ষামূলকভাবে চলতি মৌসুমের তুলনায় সামনের বার বৈশ্বিক সয়াবিন উৎপাদন বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কেননা শস্যটি উৎপাদনকারী বৃহৎ দেশগুলোয় বিশেষ করে ব্রাজিলে এ সময় সয়াবিন আবাদে জমির পরিমাণ বাড়বে বলে আইজিসি প্রত্যাশা করছে।
এদিকে আগামী মৌসুমে শস্যের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি এর মজুদ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। শস্যের চাহিদাও থাকবে বাড়তির দিকে। আইজিসি জানায়, দ্বিতীয়বারের মতো বৈশ্বিক শস্যের ব্যবহার ২০০ কোটি টন অতিক্রম করবে। এ সময় খাদ্য, পশুখাদ্য ও শিল্প খাতে শস্যের চাহিদা সবসময় বেড়েই চলছে। আইজিসির তথ্যমতে, ২০১৬-১৭ মৌসুমে বৈশ্বিক শস্যের মজুদ ৬০ লাখ টন বেড়ে ৪৮ কোটি ৮০ লাখ টনে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন শস্যের মধ্যে এ সময় ভুট্টার মজুদ সবচেয়ে বাড়বে। অন্যদিকে পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে গমের মজুদ কিছুটা কমবে।