সরকারের অনুমোদন না নিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বর্ধিত বেতন ও ফি আদায় না করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বছরের শুরুতে হঠাৎ করে বেতন-ফি বাড়ানোয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে গতকাল রোববার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ দেয়া হলো।
নতুন বেতন কাঠামোতে সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ার যুক্তি দেখিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের অধিকাংশ বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের বেতন এবার ব্যাপক হারে বাড়ানো হয়েছে, যার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন অভিভাবকরা। কোথাও কোথায় বেতন ও ফি বৃদ্ধির হার ছিলো দ্বিগুণ থেকে ৫ গুণ পর্যন্ত।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) চৌধুরী মুফাদ আহমদ স্বাক্ষরিত মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা ছাড়াই বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বর্ধিত হারে মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় করা হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা অনুযায়ী সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদকে বেতন ও ফি’র হার নির্ধারণ করতে হবে বলে আদেশে জানানো হয়। এ প্রেক্ষাপটে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বর্ধিত বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হলো।
বেতন-ফি নির্ধারণের বিষয়ে সরকার শিগগিরই নির্দেশনা দেবে বলে আদেশে উল্লেখ হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পে-স্কেলের কথা বলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও বর্ধিত বেতন দাবি করছেন। দাবি না মানলে কোনো কোনো স্কুলের শিক্ষকরা আন্দোলনে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি অনেক স্কুল। আর এ কারণে স্কুলের আয়ের একমাত্র মাধ্যম টিউশন ফি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি স্কুল প্রধানরা।
জাতীয় বেতনকাঠামোর অজুহাত তুলে বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের নামকরা বিদ্যালয়গুলো মাসিক বেতন বেশি আদায় করছে বলে অভিযোগ আছে। এ নিয়ে আন্দোলনে নামেন অভিভাবকরা।
ইতোমধ্যে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার, ভিকারুননিসা, মতিঝিল আইডিয়ালসহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন। চট্টগ্রামে অভিভাবকরা সংহতি সমাবেশ করে বর্ধিত বেতন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রী ও জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক জায়গায় স্মারকলিপি দেয়া হয় গত কয়েক দিন ধরে। যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই নির্দেশনা দেয়া হলো।