দেশের ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ২টি আন্তর্জাতিক ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৭০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হচ্ছে। এরই মধ্যে নেটওয়ার্ক তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে নেটওয়ার্কে পরীক্ষামূলক অপারেশন চলছে। অবশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেটওয়ার্কভুক্ত ক্লাসরুম তৈরির কাজ চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। দু’টি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেন।
এছাড়া, পরীক্ষামূলক অপারেশনের জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নর্থ সাউথকে নেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় কি কি নাম থাকছে তা চূড়ান্ত না হলেও তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়ার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রয়েছে। তালিকা আরও বড় হতে পারে।
এই নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য বিডিরেন ১০ গিগা ব্যান্ডউইথ নেবে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) থেকে। আগামী ১২ মে এ বিষয়ে ইউজিসির সঙ্গে বিএসসিসিএলের এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উন্নত দেশগুলোর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে আমরা একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন নেটওয়ার্ক তৈরি করতে আগ্রহী। এজন্য প্রাথমিকভাবে ওই প্রকল্পের জন্য ১০ গিগা ব্যান্ডউইথ নেওয়া হবে। ওই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকলে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠদান, পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করা যাবে। আরও আগেই এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতো। ইউজিসি চেয়ারম্যান বিদেশ সফরে থাকায় চুক্তি স্বাক্ষর করা যায়নি বলে জানান মনোয়ার হোসেন ।
জানা যায়, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এই নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে বসেই এই নেটওয়ার্কের আওতায় থাকা অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দ্রুত ডাটা আদান প্রদান,বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বসেই অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে সরাসরি উপস্থিত থাকার সুবিধা দেওয়া হবে। এতে করে বিখ্যাত সব শিক্ষকের ক্লাস সরাসরি উপভোগ করা, গবেষণার সহযোগিতা পাওয়াসহ বেশ কিছু সুবিধা পাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিডিরেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্প নামে এই প্রকল্পটির পরিকল্পনা করা হয় ২০০৯ সালে। ইতিমধ্যে তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৬০ আসন বিশিষ্ট আলাদা ক্লাসরুম করা হয়েছে, যেখানে বসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ সুবিধা দিতে গিয়ে প্রকল্পটি কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে স্বীকার করে বাংলাদেশ বিডিরেন প্রকল্পের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম হাবিবুর রহমান বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশিরভাগই দেশের এমন প্রান্তে যেখানে হাইস্পিড ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ধীর গতির ইন্টারনেট দিয়ে এই কার্যক্রম চালানো কঠিন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে কাজটি করা হচ্ছে। এ মাসের মধ্যেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।