মঈনুল হাসান পলাশ ॥ ইশ্বর তার সৃষ্টিকে ভালবাসেন। এটা স্বয়ং ইশ্বরেরই কথা। ভালবাসা থেকেই সৃষ্টির শুরু। তাই ভালবাসা মানে সৃষ্টি করা। ঘৃণা থেকে শুরু হয়, ধ্বংস। ইতিহাসের শুরু থেকেই ভালবাসা আর ঘৃণার অবস্থান মুখোমুখি। আর তাই বিপরীতমুখী হয় সৃষ্টি আর ধ্বংস। ভালবাসতে যে পারে, সে বিধাতার আশীর্বাদপুষ্ট। আর যে শুধু পারে ঘৃণা করতে, নিশ্চিতভাবেই সে অভিশপ্ত। ভালবাসতে কী কেবল মানুষই পারে? প্রকৃতি তার সৃষ্টি, অবোধ প্রাণীর মাঝেও দিয়েছে ভালবাসতে পারার স্বর্গীয় ক্ষমতা। হাজারো বছর ধরে সৃষ্টিকূলের মাঝে ভালবাসা বহমান। আর ভালবাসার নান্দনিক উত্তরাধিকার হলো সেরা জীব মানুষ। মানুষের ভালবাসা আকাশ ছুঁতে পারে। আবার তার ঘৃণার আগুনে পুড়ে হয় নরক কুন্ড। এতো যে বলা হলো ভালবাসা নামের পরশ পাথরের কথা, যার ছোঁয়ায় মানুষ হয় পবিত্রতম, সেই ভালবাসার বড্ড আকাল পড়েছে যেনো। ভালবাসাবিহীন এই সমাজ আর রাষ্ট্র ক্রমেই আধুনিক জঙ্গল হয়ে উঠছে। গোত্র,বর্ণ,ধর্ম, আদর্শ-এমন-কী ঠুনকো দলীয় পরিচয়ে বিভাজন এর দেয়াল তুলে চলছে ঘৃণার প্রতিযোগিতা। একে অন্যকে ধ্বংস করে দেয়ার হাস্যকর,অবাস্তব প্রচেষ্টায় পশুর মতো একগুয়ে কিছু মানুষ। শক্তির জোরে মানুষ, মানুষকে গোলাম বানাতে চায়! অথচ, ভালবেসে কতো সহজে মানুষ, মানুষকে পরাস্ত করতে পারে। অন্যকে পরাস্ত করবার এমন আদি-অকৃত্রিম হাতিয়ারটি প্রয়োগ না করে বোকা একদল মানুষ মারণাস্ত্র দিয়ে কাবু করতে চায় অন্যকে, অন্যদেরকে। কতিপয় মানুষের এমনতরো বোকামীতে সৃষ্টিকর্তা নিশ্চিত কৌতুকবোধ করেন। ভালবাসা, মানে ভালোতে বসবাস। তাই ভালো থাকবার জন্যই প্রয়োজন মানুষে-মানুষে ভালবাসার অটুট-অকৃত্রিম বন্ধন। মানুষ, সে যতো ক্ষুদ্রই হোক, যতোই তুচ্ছ হোক তার অবস্থান,তাকে ঘৃণা করবার অধিকার কারো নেই। আর, মানুষকে ভালবাসতে যেমন সবাই পারে না, যোগ্যতা লাগে, তেমনি মানুষের ভালবাসা পেতেও লাগে যোগ্যতা। আসুন, আমরা সেই যোগ্যতা অর্জন করি। অন্যের ভালবাসা পাবার যোগ্যতা অর্জন করি। কারণ,মানুষের ভালবাসার চেয়ে মূল্যবান উপহার হয় না। পৃথিবীতে নেই। সবাইকে ভালবাসা দিবসের অভিনন্দন।
লেখক-সম্পাদক ও প্রকাশক: দৈনিক সমুদ্রকন্ঠ।