মন্তব্য কলাম… কক্সবাজারের যে সব খবর এখন স্থানীয় পাঠকেরা পড়েন না!
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
৩১০
বার পড়া হয়েছে
স্থানীয় সংবাদপত্রে স্থানীয় পাঠকেরা স্থানীয় সংবাদই সবার আগে খোঁজেন। এই আর নতুন কী?
তবে,একই কাহিনী বার বার পড়লে যেমন তা প্রথমে বিস্বাদ ও পরবর্তীতে বিরক্তির কারণ হয়,তেমনি কক্সবাজারের কিছু স্থানীয় সংবাদ এখন পাঠকের বিরক্তির কারণ। মূলতঃ যতোই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হোক না কেন, কক্সবাজারের স্থানীয় পাঠকেরা এখন এই সংবাদগুলো পড়েন না।
না পড়া এইসব সংবাদের শীর্ষে রয়েছে,ইয়াবা আটক এর খবর। আমার ধারণা,খোদ ইয়াবার পাচারকারীরাও এখন ইয়াবা আটকের খবর পড়ে না।
তবে ইয়াবা আটকের খবর এর সবচেয়ে মনোযোগী পাঠক বিজিবি, পুলিশ আর ক্ষেত্র বিশেষে র্যাব এর লোকজন। কারণ ইয়াবা ধরার মাঝে তাদের “সাফল্য” নিহিত আছে। তবে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়,বিজিবি যে সব ইয়াবার চালান আটক করে, ওই চালান বেশীরভাগ জ্বীনে-ভুতে(!) করে। কারণ বিজিবি ইয়াবা পায়, কিন্তু পাচারকারী পায় না।
এই তো গেলো ইয়াবা। এরপরে স্থানীয় পাঠকের কাছে একঘেয়ে সংবাদ হলো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ-রোহিঙ্গা পুশব্যাক। কতো রোহিঙ্গা এলো-গেলো, এনিয়ে সাধারণ পাঠকদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ২৫বছর ধরে রোহিঙ্গা কাহিনী চলছে। রোহিঙ্গার সংবাদ হচ্ছে। ২৫ বছর ধরে একই ধাঁচের খবর কে পড়বে আগ্রহ করে?
একঘেয়ে সংবাদের তালিকায় আরো আছে, পাহাড় কাটা, গাছ কাটা। কবে কোন্ কালে কক্সবাজারে পাহাড় কাটা চলেনি? কবে পাহাড় কাটা বন্ধ হবে?
বরঞ্চ সাধারণ পাঠক ধারণা করেন, সব পাহাড় না কাটা পর্যন্ত কক্সবাজারে পাহাড় কাটা থামবে না। তাই এই সংক্রান্ত খবরের গুরুত্বটা কী?
আর বন কাটা-গাছ কাটার সংবাদে খোদ বনবিভাগের লোকজন হাসাহাসি করে। টিপ্পনী কাটে-“লিখে কী হবে!” বেচারা পাঠক পড়বে কী?
তালিকায় আরো কিছু সংবাদ আছে। আছে, ৬ সন্তানের জনকের সাথে, ৫ সন্তানের জননীর পলায়ন-টাইপের খবর। আছে-কার বেড়া, কে ভাঙ্গলো-জাতীয় সংবাদ। আর লম্বা করলাম না।
তবে স্থানীয় পত্রিকায় অত্যন্ত গেঁয়ো,বালখিল্য ও হাস্যকর খবরের শিরোনামে অস্বস্তি লাগে অনেক সময়। “ছোঁয়া”-শব্দটার প্রতি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের এতো দূর্বলতার কারণ আমার বোধগম্য নয়। বিশেষ করে “মাদকের ছোঁয়া” শিরোনাম দিয়ে সংবাদ ! যেনো, মাদক কোনো নরম তুলার মতো তুলতুলে জিনিস। ছুঁয়ে দিলেই হলো!
“দুর্নীতির মহোৎসব”, “মাদকে সয়লাব” আর আছে “শীর্ষ” শব্দের ব্যাপক ব্যবহার। সব সন্ত্রাসী ধরা পড়লেই শীর্ষ সন্ত্রাসী। আর সব মানব পাচারকারীই শীর্ষ মানব পাচারকারী। বাংলা ব্যাকরণের কিঞ্চিৎ জ্ঞানে যদ্দুর জানি, শীর্ষ শব্দটি একবারই হয়। একাধিক শীর্ষ হতে পারে না। অথচ কক্সবাজারের স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ব্যাকরণ জ্ঞানে বিস্মিত!
লেখক : মঈনুল হাসান পলাশ, সম্পাদক ও প্রকাশক-দৈনিক সমুদ্রকন্ঠ।