মহেশখালীতে গ্যাস লাইন প্রকল্প প্রতিকূলতা ও বাঁধায় ভেস্তে যেতে পারে সরকারের মহৎ উদ্যোগ
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
২০২
বার পড়া হয়েছে
দেশের জাতীয় চাহিদা মাথায় রেখে সরকার মহেশখালী হয়ে চট্টগ্রামের পথে গ্যাস লাইন নিয়ে যাওয়ার ইতোমধ্যে মহেশখালীতে দৃশ্যমান কাজ শুরু করেছে। তবে এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে সচেতনতার অভাব, নানা প্রতিকূলতা ও এলাকার লোকজনের বাঁধার কারণে সরকারের মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে গ্যাস ট্রান্সমিশনের দায়িত্বে থাকা কোম্পানির অবহেলার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকমূলক এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয়দের সহায়তা চেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দ্রুত জমি মালিক ও চাষে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ আদায় পূর্বক লাইন সঞ্চালন কাজ তরান্বিত করার দাবী উঠেছে ওয়াকিবহাল মহল থেকে। আজ সরকার ও পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ মহেশখালী সরজমিন করবেন বলে জানাগেছে।
সূত্র জানায়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার ভিত্তিক সিদ্ধান্তের পটভূমিতে দ্রুত তার সাথে গ্যাস লাইন স্থাপনের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় দীপন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি তৃতীয় পক্ষের হাতে। তবে এর আগে মাঠ পর্যায়ে টোটাল বিষয়টি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেয় সিটিসিএল গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড নামের অন্য একটি সংস্থা। ইতোমধ্যে গত জানুয়ারি থেকে মহেশখালী হয়ে চট্টগ্রামের পথে গ্যাস লাইন স্থাপনের দৃশ্যমান কাজ শুরু করেন দীপন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। ইতোমধ্যে তারা কোটি কোটি টাকার ইকুইপমেন্ট মহেশখালীতে নিয়ে আসে। মূলত গত ২৯ জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করতে যেয়ে প্রথম দিক থেকে প্রতিকূলতার মধ্যে পড়ে সংশ্লিষ্টরা। মহেশখালীর প্রধান সড়ক ও শাপলাপুর সড়কে বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু না করে দু’টি সড়কেই একাধিক সেতুর উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। যার ফলে এসব সড়ক দিয়ে দূরপাল্লার যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে সংস্থাটি নিজস্ব অর্থায়নে বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে স্থলযান নির্ভর যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে বিলম্বে কাজ শুরু করতে সক্ষম হন তারা। মূল্যায়ন ম্যাপ ও ড্রয়িং পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রাথমিক ভাবে উপজেলার ঘটিভাঙ্গা মৌজার সমুদ্র তীর থেকে পশ্চিমে অন্তত: দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় রয়েছে গ্যাস লাইনটির জিরো পয়েন্ট। ওই পয়েন্ট থেকে লাইন শুরু হয়ে ঘটিভাঙ্গা সমুদ্র তট এলাকা ধরে পানির ছড়া মৌজার ধলঘাট পাড়া পর্যন্ত লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্টরা। এই কাজ শুরু করতে গিয়ে প্রথম দিকেই জমির মালিক ও স্থানীয়দের বাঁধার মুখে পড়েন নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা। এখানে পরিখা খননের কাজ শুরু হওয়ার পর চাষি ও জমির মালিকগণ নানা ভাবে কাজে বাঁধাদিয়ে আসছে বলে সূত্রে প্রকাশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে এনিয়ে সামগ্রিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয় দীপন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডকে। নিয়মমতো ৮ মিটার জমি রিকোজিশন করে ওই জমিতে থাকা চাষিদের ক্ষতি পূরণ দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে এই কাজটি সম্পন্ন করতে খানিকটা বিলম্ব হয়। এদিকে সরকারের চাহিদার মুখে দ্রুত কাজ শুরু করারও তাগিদ রয়েছে দীপন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড এর প্রতি। মূলত সরকার আগামী দু’বছরের মধ্যে এই লাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে চায়। এই মুহূর্তে কাজের ব্যাপক অগ্রগতি না হলে প্রকল্পটি নিয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হবে সংশ্লিষ্টদের। ইতোমধ্যে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনে আর্থিক বিষয়টি সম্পন্ন করেন বলেও সূত্র জানিয়েছে। জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে চলমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল চাষিদের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনা করে তা সুরাহার জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এনিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, পিআইবি, এসিল্যান্ড ও ওসি’র সাথে কথা চলছে। এদিকে উন্নয়ন প্রত্যাশী সচেতন মহলের দাবী দ্রুত সময়ের সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করে দেশের বৃহৎ স্বার্থে লাইন সঞ্চালন কাজ তরান্বিত করা হোক।