মহেশখালী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প : প্রতিশ্রুতি পুরণ করেনি জাইকা, অন্য প্রকল্পে প্রভাব পড়ার আশংকা
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৬
২৭৮
বার পড়া হয়েছে
মাতারবাড়ির লোকজনকে দেওয়া কোন শর্তই পুরণ করেনি জাইকা। মহেশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সর্বক্ষেত্রে স্থানীয়দের প্রাধান্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও এখনো একটি শর্তও পুরন করেনি কর্তপক্ষ। যার ফলে স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। প্রতিশ্রুতি পুরন না করলে এর বিরুপ প্রভাব অন্য প্রকল্পে পড়তে পারে বলে মনে করছেন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শুরু হতে না হতেই স্থানীয়দের এড়িয়ে চলার কৌশল অবলম্বন করেছে জাইকা। বিগত সময়ে সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক এলাহী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিবসহ ১৩ জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পৃথকভাবে মাতারবাড়ি সফরকালে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। নেতৃবৃন্দের প্রতিশ্রুতিতে ছিল প্রজেক্ট কার্যক্রমের শুরুতে স্থানীয়দের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, অধিগ্রহনকৃত জমির উপর নির্ভরশীলদের পুর্নবাসন ও ক্ষতিপুরন প্রদান, বিভিন্ন পণ্য সরবরাহে স্থানীয়দের প্রাধান্য দেয়া ও সম্পৃক্তকরণ। মাতারবাড়ি আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম ছমিউদ্দিন জানিয়েছেন, কোন প্রতিশ্রুতিই এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। গত ১১ এপ্রিল সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন হয়নি। ১৫ দিনের মধ্যে বেড়িবাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, মানুষ বিনা বাধায় জমি হস্তান্তর করলেও এখন কর্তৃপক্ষ তার উল্টো অবস্থান নিয়েছেন। যা কোনভাবেই মাতারবাড়ির মানুষ মেনে নেবে না। মাতারবাড়ির মানুষ চায় প্রতিশ্রুতির যথাযথ বাস্তবায়ন। সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরী রুহুল জানান, বর্তমানে মাটি কাটার জন্য মহেশখালীর বাইরে থেকে লোক আনা হয়েছে। যার ফলে মাতারবাড়ির হাজারো শ্রমিক এখন বেকার হয়ে পড়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতিমত জমি দিয়েছি এখন জাইকা ও কোল্ড পাওয়ার জেনারেশন তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না। অপরদিকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে তাদের সকল দাবী পর্যায়ক্রমে পুরণ করবে সরকার। স্থানীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছেন। এবার এগিয়ে যাওয়ার পালা। তবে প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোন মিল খুঁজে পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডঃ সিরাজুল মোস্তফা জানান, সাধারণ মানুষের পক্ষেই সরকারের অবস্থান। যারা জমি দিয়েছে তাদের পুর্নবাসন করতে স্থানীয়দেরই কাজ দিতে হবে। আশেক উল্লাহ রফিক এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর পূর্ণ আস্থা আছে মহেশখালীর মানুষের। সরকারের এই মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে মহেশখালীর ৬ লাখ মানুষ। সাধারণ মানুষের পক্ষেই প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান। তাই স্থানীয় লোকজনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হলে অন্য প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হতে পারে। মানুষের মাঝে আস্থার সংকট সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে মাতারবাড়িতে বিপুল সংখ্যক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। তাই সর্বক্ষেত্রে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার না দিলে মানুষের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হবে। এদিকে গতকাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আবুল কাসেম প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, ১০ দিনের মধ্যে বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।