আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মহেশখালীতে মেয়র পদে লড়ছেন ৫জন প্রার্থী। এর মধ্যে একজন বিএনপি প্রার্থী বাদে বাকি চারজনই আওয়ামী পরিবারের সদস্য। ফলে নিবার্চনে নৌকার জয়ের পথে আওয়ামী লীগই বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মহেশখালী পৌরসভা জুড়ে নির্বাচনী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিষয়টি। বলা হচ্ছে, এ পৌরসভায় লড়াই হবে আ’লীগ বনাম আ’লীগে। শেষ পর্যন্ত জয়ের মাল্য পড়বেন কে তা নিয়েও চলছে জোর গুঞ্জন, বিদ্রোহী নাকি নৌকা প্রতীক।
নির্বাচন অফিস ও দলীয় সূত্র জানায়, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মকছুদ মিয়া। আর তার জয়ের সবচেয়ে বড় বাধা গতবারের পৌরসভা নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার আজম। এছাড়া নির্বাচনে লড়ছেন মেয়র মকছুদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার আর সাবেক মেয়র সরওয়ার আজমের ছোট ভাই হামিদুল হক। তবে ফারজানা ও হামিদুল ডেমো প্রার্থী হিসেবেই মাঠে থাকবেন বলে ভোটারদের অভিমত।
এখনো আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়নি। কিন্তু হিসেব নিকেষ শুরু হয়েছে বহু আগেই। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা। ভোটের ফলাফল নিয়ে এখন থেকেই চায়ের কাপে ঝড় উঠছে।
তবে সব কথাই এক জায়গায় এসে থমকে যাচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হবে তো। কে হচ্ছেন নতুন পৌর পিতা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জয়ে একমাত্র বাধা আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম। কেননা দুই প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা সমানে সমান।
অন্যদিকে মেয়র নির্বাচনে আ’লীগের এত জটিলতার মধ্যে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা শ্রমিক দলের আহবায়ক মহিউদ্দিন বাশি। যাকে চিনেন না মহেশখালী পৌর বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরাই।
তাই ভোটারদের বদ্ধমূল ধারণা, এবারের নির্বাচনে জিতবে নৌকা প্রতীক না হয় বিদ্রোহী প্রার্থী।
মহেশখালী গোরকঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী শাহাজাহান বলেন, বিএনপির প্রার্থীকে তো চিনি না। তাই লড়াইটা হবে বর্তমান ও সাবেক মেয়রের মধ্যে। দুজনের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যে যত দ্রুত মাঠ গোছাতে পারবে সেই জিতবে।
রিকশাচালক কলিম মিয়া বলেন, মেয়র মকছুদ ও সাবেক মেয়র সরওয়ার দুজনেরই নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। লোকবল রয়েছে। সেদিক থেকে লড়াইটা হবে বাঘে-মহিষে।
তবে হিন্দু পাড়ার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আপাতত আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এগিয়ে রয়েছে। কারণ মেয়র মকছুদের বাবা ও চাচারা রাজাকার ছিলেন। যুদ্ধাপরাধী ট্রাইবুন্যালে তার চাচার বিচার শুরু হয়েছে। সে কারণে সংখ্যালঘুদের ভোট মেয়র মকছুদের পক্ষে না যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কিন্তু এ অংক মানতে নারাজ মেয়র মকছুদের সমর্থকরা। তাদের মতে, পৌরবাসী আবারও মকছুদের গলায় জয়ের মাল্য তুলে দিবেন। কারণ তিনি বিগত ৫ বছরে মহেশখালীকে বদলে দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক বা ভোটাররা যাই বলুন না কেন, ভোটের ফলাফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২০ মার্চ রাত পর্যন্ত। সেই রাতেই মহেশখালীবাসী পাবে নতুন পৌর পিতা। তাই ওই রাতের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন পৌরবাসী।