মাদক ব্যবসায় যত বড় গডফাদারই জড়িত থাকুন না কেনো সরকার কাউকেই ছাড় দেবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে ওয়াদা করেন তা রক্ষা করেন। দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে নিজ দলের লোকজনের বিরুদ্ধেও সরকারের ব্যবস্থা নেওয়ার নজির রয়েছে।
‘দেশব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযান ও প্রচারণা মাস’ উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার বেলা ১১টায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন বিয়াম মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যৌথভাবে মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে তালিকাটি প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করা হয়।
এতদিন ধরে মিয়ানমারে ইয়াবা কারখানা থাকার ব্যাপারে বাংলাদেশের দাবি অস্বীকার করলেও মিয়ানমার এখন স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার তাদের দেশে থাকা ইয়াবা কারখানাগুলো ধ্বংস করার ব্যাপারে কথা দিয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজারের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক ও হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুর রহমান।
এ সময় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি বলেন, ‘আমাকে কেউ ইয়াবা ব্যবসায়ী প্রমাণ করতে পারলে সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করবো।’
ইয়াবা ব্যবসায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকরাও জড়িত দাবি করে বদি বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অভিযানে বেশি দামের যেসব ইয়াবা উদ্ধার হয়, তা সংশ্লিষ্টরা কম দামের দেখিয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিক্রি করেন। আর সাংবাদিকরা ওইসব ইয়াবা ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়ে পাচার করেন।’
মাদকের চোরাচালান ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনের লক্ষ্যে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড জানুয়ারি মাসকে দেশব্যাপী ‘মাদক বিরোধী অভিযান ও প্রচারণা মাস’ পালনের ঘোষণা দেয়। এ অভিযানের কার্যক্রম কক্সবাজার থেকে উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষে নেওয়া হয় নানা কর্মসূচি।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন পালিত হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সামাজিক সংগঠন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার লোকজন অংশগ্রহণ করেন। পরে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্টের বিয়াম মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়।