মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার শুনানি থেকে অবশেষে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন হাইকোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
সদ্য অবসরে যাওয়া একজন বিচারপতি সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার সময়ে এ ধরনের মামলায় আসামি পক্ষের হয়ে লড়তে পারেন কিনা এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে এবং প্রধান বিচারপতি তাকে সামনে রেখে অবসরপ্রাপ্ত ও দায়িত্ব পালনরত বিচারপতিদের নিয়ম-নীতি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়ার পর তিনি সোমবার আদালতে এ ঘোষণা দিলেন।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটির তৃতীয় দিনের শুনানি শুরু হলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে নিজেকে মামলা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানান।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এতে সম্মতি দেন। পরে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন মীর কাসেমের আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
মীর কাসেম আলীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন রবিবার এ বিষয়ে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট রুলস অনুযায়ী কোনো আইনজীবী মামলা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করতে হলে তাকে আদালতে তা উপস্থাপন করতে হয়। এরপর তিনি ঘোষণা দিতে পারেন। আগামীকাল মীর কাসেম আলীর মামলার শুনানি আছে। তিনি (বিচারপতি নজরুল) নাম প্রত্যাহার করবেন কি না, তা আগামীকাল আদালতে উপস্থাপন করবেন।’
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের এই নেতার মামলা নিয়ে আদালতে হাজির হন হাইকোর্টের সদ্য অবসরে যাওয়া (পিআরএল ভোগরত) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং মামলার পেপারবুকও পড়েন। এ সময় সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত ও দায়িত্ব পালনরত বিচারপতিদের নিয়ম-নীতি মেনে চলার পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি (বিচারপতি নজরুল) এখনও জাজেস লাউঞ্জ ব্যবহার করেন। ওখানে আইনজীবীদের নিয়ে মামলার বিষয়ে কথা বলেন। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত সব বিচারপতির কাছে আশা করবো, সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা অবস্থায় আপনারা কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলবেন।’
এর আগে গতকাল রবিবার দুপুরে মীর কাসেম আলীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেমের সঙ্গে বৈঠক করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। বৈঠক শেষে আইনজীবী প্যানেল থেকে নাম প্রত্যাহারের বিষয়ে সোমবার জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন সাবেক এই বিচারপতি।