নিউজ ডেস্ক, ডেইলি কক্সবাজার :
কক্সবাজারের রামুতে আওয়ামী লীগের নেতা মহিউদ্দিন হত্যার এক মাস পেরিয়ে গেলেও মূল আসামিরা এখনো ধরা পড়েনি। ফলে বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
গত ১৬ জুন দিবাগত রাতে ঈদগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিনকে তাঁর বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী জাহেদা বেগম বাদী হয়ে রামু থানায় ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর পুলিশ নুরুল ইসলাম ও মনির আহমদ নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার বাদী জাহেদা বেগম বলেন, ‘মহিউদ্দিনের সঙ্গে চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদের দ্বন্দ্ব ছিল। মহিউদ্দিনকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আসামি করে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন তিনি। গত বছর ফিরোজ আহমদ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মহিউদ্দিনের বাড়ির গেট ভেঙে ফেলেন। ওই ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করলে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীকে হত্যা করেন।’
জাহেদার অভিযোগ, পুলিশের প্রশ্রয়ে থেকে চেয়ারম্যান তাঁর পরিবারকে এলাকাছাড়া করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। হত্যা মামলা প্রত্যাহার না করলে পরিবারের সদস্যদের অপহরণের পর লাশ গুম করার হুমকি দিচ্ছেন। তিনি তিন সন্তান নিয়ে এ বাড়ি-ও বাড়ি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ অবস্থায় সন্তানদের লেখাপড়া নষ্ট হচ্ছে।
নিহত মহিউদ্দিনের বাবা ফয়েজ আহমদ বলেন, ফিরোজ চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাঁর ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামিরা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় থেকে চেয়ারম্যান মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত করছেন। অথচ তাঁকে ধরছে না পুলিশ।
ঈদগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম বলেন, মহিউদ্দিন পেশায় গ্রাম্য চিকিৎসক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব ছিল। এই দ্বন্দ্বের জেরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজলও একই কথা বলেন। কাজল বলেন, মহিউদ্দিন মূলত ফিরোজ চেয়ারম্যানের দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার একজন ব্যক্তি। মহিউদ্দিনের বাড়ি লুটপাট হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকেও নির্মমভাবে খুন করা হলো। এখন হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে আসামিরা বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, জমি–সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মহিউদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে মামলার দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিরা আত্মগোপন করায় ধরা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে। পরিবারের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের নজরদারি রয়েছে।’
সুত্র-প্রথমআলো