রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া এলাকায় বন্য হাতির হামলায় স্কুল ছাত্রী প্রাণ হারিয়েছে। হাতির পাল হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে ৮টি বসত ঘর। বৃহষ্পতিবার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাশেদা বেগম (১৫) ফয়েজ আহমদের মেয়ে। সে রামকোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী বলে জানা গেছে।
রাজারকুল ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম জানিয়েছেন, রাতে আকষ্মিকভাবে বন্য হাতির পাল ঘোনারপাড়ার জনবসতিপূর্ণ এলাকায় তান্ডব শুরু করে। এসময় আতংকিত লোকজন চিৎকার শুরু করলে বিভিন্ন বসত বাড়ির লোকজন ঘুমন্ত অবস্থা থেকে জেগে পালাতে শুরু করে।
নিহত রাশেদা বেগমের বাবা ফয়েজ আহমদ জানান, হাতি এসে পার্শ্ববর্তী আবছারের বসত ঘর ভাঙ্গার সময় তার পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভাঙ্গে। এসময় তাই দুই মেয়ে মেয়ে ইয়াছমিন আকতার ও রাশেদা বেগম হাতির কবল থেকে বাঁচতে বাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় বন্য হাতি ছোট মেয়ে রাশেদা বেগমকে শুঁড় দিয়ে আটকে ফেলে এবং মাটিতে ফেলে পা দিয়ে রাশেদার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায় ওই ছাত্রী। তবে প্রাণে রক্ষা পান বড় বোন ইয়াছমিন আকতার সহ বাড়ির ছয় সদস্য।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, বন্য হাতি এলাকার ৮টি বসত বাড়ি ভাংচুর করেছে। হাতির তাড়া খেয়ে আত্মরক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরো ৫ জন। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
বন বিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা আমির হামজা জানিয়েছেন, বন্য হাতির হামলায় স্কুল ছাত্রীর মৃত্য হয়েছে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে গুড়িয়ে দেয়া বাড়িগুলো দেখেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, বন্য হাতির দল ওই এলাকার ফয়েজ আহমদ, আবছার, রুপন শর্মা, মোহাম্মদ নবীর বাড়ি সহ আটটি বাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে। এসব বাড়ির সদস্যরা বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর সময় কাটাচ্ছে। এছাড়া রাজারকুল ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বন্য হাতির আতংকে রয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, হাতিল পাল কয়েকদিন পরপরই লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। প্রতিবারই মানুষের বসত ঘর ভাংচুর করে যাচ্ছে। এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকাল চারটায় হাতির হামলায় নিহত স্কুল ছাত্রী রাশেদা বেগমের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।