চলতি লবণ মৌসুমে চাহিদার চেয়ে (আনুপাতিক হারে) দুই লাখ মেট্রিক টন লবণ বেশী উৎপাদন হলেও লবণ আমদানির ষড়যন্ত্র শুরু করেছে একটি ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট। ইতোমধ্যে ওই সিন্ডিকেট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লবণ আমদানির অনুমতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আবেদন করেছেন। যার ফলে লবণ চাষীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। তবে লবণের কোন ঘাটতি নেই বলে জানালেন জেলা প্রশাসক ও বিসিক কর্তৃপক্ষ।
বিসিকে’র হিসাব মতে কক্সবাজার ও বাশখালী জেলার প্রায় ৬০ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ পুরুদমে চলছে। এখন ভরা মৌসুম। গত ২০ মার্চ পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছে ৯ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন। যা গত মৌসুমের চেয়ে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন বেশী। আগামী মাসেই লবণের চাহিদার ১৬ লাখ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন ছাড়িয়ে লক্ষ্যমাত্রা ১৮ লাখ মেট্রিক টনে পৌছে যাবে। লবণ উৎপাদনে ৪০ হাজার প্রান্তিক চাষী পুরুদমে কাজ করছেন। বিসিক কর্তৃপক্ষ প্রতি সপ্তাহে লবণ উৎপাদনের পরিমান নির্ধারণ করছেন।
মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে উদৃত লবণ রপ্তানী করার কথা ভাবছেন সেখানে লবণ আমদানির জন্য তোড়জোড় কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। উপকুলীয় এলাকার ১০ লাখ মানুষ লবণ চাষের উপর নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাষীদের পক্ষেই অবস্থান নেন। এ বিষয়টি আবারো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হবে। লবণ রপ্তানীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে, আয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন জানান, লবণ আমদানির বিষয়টি বিসিক কর্তৃপক্ষ অবহিত করেছেন। তাদের জরীপ অনুযায়ী দুই লাখ মেট্রিক টন লবণ আনুপাতিক হারে গত মৌসুমের চেয়ে বেশী উৎপাদন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে লবল আমদানির কোন প্রয়োজন নেই বলে তিনি জানান।
বিসিক’র উপ-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবসার উদ্দিন জানান, বিসিক’র জরীপ অনুযায়ী লবণের কোন ঘাটতি নেই। চাহিদার চেয়ে আরো বেশী লবণ উৎপাদন হবে। লবণ উৎপাদনে গত মৌসুমের চেয়ে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে লবণ আমদানির অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আবেদন করেছে এমনটি শুনেছি তবে আমাদের কাছ থেকে এখনো প্রতিবেদন চায়নি মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ লবণ পরিষদের সভাপতি মোস্তফা কামাল চৌধুরী জানান, লবণ আমদানি করে লাভবান হয় কয়েকজন ব্যবসায়ি অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১০ লাখ মানুষ। বার বার ওই ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট কৌশলে লবণ আমদানির ষড়যন্ত্র করে। তাদের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় চাষীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। এতে প্রধানমন্ত্রী সায় দেবে এমনটি মনে হয় না। তিনি সব সময় চাষীদের পক্ষেই অবস্থান নেন।
মহেশখালীর লবণ চাষী মনজুর আলম বাদশা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লবণ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করায় চাষীরা উৎফুল্ল হয়েছিলেন। সম্প্রতি ওই ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট বার বার ষড়যন্ত্র করায় আমরা উদ্বিগ্ন।