গত সপ্তাহ খোলা লবণ ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং প্যাকেটের লবণ ২০ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
সরকারের বাণিজ্যিক সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে লবণের দাম ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
হঠাৎ লবণের দাম বাড়ার জন্য সরবরাহে ঘাটতি এবং আমদানির ওপর বাধার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানির বিষয়ে সরকার নমনীয় না হলে দাম আরও বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তারা।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) হিসাবে দেশে বছরে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টন লবণের চাহিদা রয়েছে। গতবছর দেশে উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ টন।
চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় গত বছরের অক্টোবরে এক বৈঠকে সাড়ে ৩ লাখ টন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় লবণ কমিটি।
তার বিপরীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক লাখ টন লবণ আমদানির অনুমোদন দেয় বলে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি পরিতোষ কান্তি সাহা জানান।
পূবালী সল্টের মালিক পরিতোষ বলেন, “সরকারের ভুল নীতির কারণে লবণের দাম বাড়ছে। সরকার লবণ আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণ তুলে না নিলে এই পণ্যটির দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।”
তিনি বলেন, “আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বারবার চিঠি দিয়েছি, তারা কর্ণপাত করে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে- সামনে মৌসুম আছে, তখন সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে। ৩০ টাকা লবণ চলছে, বৃষ্টি হলে এটা আরও বেড়ে ৩৫ টাকা হয়ে যেতে পারে।”
লবণ আমদানি নিয়ন্ত্রণে চাষী, মিল মালিক বা সাধারণ মানুষ- এদের কেউই লাভবান হচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ঊপকুলীয় এলাকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রভাবশালীরাই এর ফল ভোগ করছে।”
গত চার/পাঁচ বছর ধরে লবণের দাম স্থিতিশীল জানিয়ে এসিআই সল্টের পরিচালক (বিজনেস) কামরুল হাসান বলেন, “গত মাসেও লবণের দাম ছিল প্রতি কেজি ২৫ টাকা। সেটা এখন ৩২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে এখন কেন ৭ টাকা কেজিতে বাড়ল।
“এর কারণ হচ্ছে অপরিশোধিত লবণের সরবরাহে সংকট ছিল। নভেম্বরে বৃষ্টি হওয়ায় ভালো উৎপাদন হয়নি। এজন্য সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি হয়। তবে এখন আবার কক্সবাজারে লবণের উৎপাদন হচ্ছে। সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে।”
প্রধানত মার্চ থেকে মে মাস লবণ উৎপাদনের মৌসুম। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ওই সময়ে লবণের দাম কমে আসবে বলে মনে করেন কামরুল হাসান।