শহরের উত্তর টেকপাড়ার বিস্তৃর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে ভাসছে। এতে এলাকার প্রায় ২ শত ঘরবাড়ি প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘন্টা পানি বন্দি হয়ে পড়ছে। যতক্ষণ জোয়ারের পানি নেমে না যায় ততক্ষণ এসব বাড়ির মানুষজন পানিবন্দি হয়ে থাকে। এতে খাবার পানির তীব্র সংকটে এলাকাবাসী মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। অন্য দিকে কয়েকদিনের নিয়মিত জোয়ারের পানি ঢুকে কয়েক লাখ টাকার ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষের দাবী স্থানিয় এক ভূমি কর্মকর্তাসহ প্রভাবশালীরা নদীর পাড় দখল করে বিক্রি করায় এবং উত্তর টেকপাড়ার সøুইস গেইট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সংস্কারে অনিয়ম হওয়ায় তারা জোয়ার ভাটার মধ্যে পড়েছে। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে সøুইস গেইট ঠিক আছে তবে নদী পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। আর দখলকারীদের কারনে পানি তার নিজস্ব গতিতে চলতে পারছে না। কক্সবাজার শহরের উত্তর টেকপাড়া এলাকার শহররক্ষা বাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দা আবদুল আলিম, নাছির উদ্দিন বলেন আমরা বর্তমানের জোয়ার ভাটার মধ্যে আছি। প্রতিদিন সকাল ১১ টার পর হতে সøুইস গেইট দিয়ে পানি ঢুকে আমাদের বাড়িঘর পর্যন্ত চলে আসে, এর ফলে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারি না। এমনকি খাবার পানিও পান করতে পারছিনা। বাথরুমসহ সব ধরনের দৈনন্দিক কাজকর্মও করতে পারছি না। প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে এই অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে আছি। মোটকথা প্রতিদিন ২ বেলা করে রাতে এবং দিনে প্রায় ৮ ঘন্টা আমাদের বাড়ির ভেতর পানিবন্দি থাকতে হয়। কোন কাজকর্মও করতে পারি না। এ অবস্থা চলতে থাকলে না খেয়ে মারা যাব। মর্জিনা বেগম নামের এক গৃহীনি বলেন, কয়েকদিনে পানিবন্দি দশার মধ্যে থেকে ছেলে-মেয়েদের শরীরে অসুখ দেখা দিচ্ছে। এখন চিকিৎসা করাতেও যেতে পারছি না। রাতের জোয়ারের সময় আমাদের খুব ভয় লাগে যদি কোন কারনে পানি বেশি হয়ে যায়, তাহলে ঘরেই মরতে হবে। তিনি বলেন, আমরা বাইরে থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করি, এখন বিশুদ্ধ পানিও আনতে পারছি না। আর পানি উঠার মূল কারন হিসাবে তিনি বলেন, মূলত কিছু দিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড সøুইস গেইটটি সংস্কার করেছিল। মনে হয় তারা সেখানে কোন সমস্যা করেছে, না হলে আগে কোন দিন পানি উঠেনি কেন? তাছাড়া কিছু প্রভাবশালী লোক সøুইস গেইট এলাকায় জমি দখল করে তা বিক্রি করে দিয়েছে, যার ফলে পানি তার নিজস্ব পথে চলতে পারছেনা এখন আমাদের বাড়ি ঘরে উঠে আসছে। দখলবাজদের মধ্যে প্রধান হিসাবে জয়নাল নামের এক তহসিলদারের নাম উল্লেখ করেন তিনি। স্থানিয় অনেকে বলেন, বর্তমানে হ্নীলাতে কর্মরত এ ভূমি কর্মকর্তা এসব জমি বিএসএ খাস দেখিয়ে আবার কিছু ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে বেশ কিছু জমি বিক্রি করে প্রায় অর্ধ কৌটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া মাবুদ, জামাল, এবং চন্দনির মা নামের দখলবাজরা বেশ কিছু জমি দখল করেছে তারা আবার বিক্রিও করেছে। এ ব্যাপারে স্থানিয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল হক বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি এলাকার মানুষ জনের আর্তনাদ শুনছি, কিন্তু কিছুই করতে পারছি না। আমার জানা মতে পানিবন্দি মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে আছে। অনেক ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি দ্রুত সøুইস গেইট পূর্ণ মেরামত করার জন্য দাবী জানান। না হলে সামনের বর্ষা মৌসুমে বৃহত্তর ৪নং ওয়ার্ডে ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন তিনি। এব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সবিবুর রহমান বলেন, আমি ২টি সøুইস গেইট পরিদর্শন করেছি। মূলত নদী পলিমাটিতে ভরে গেছে, পানির ধর্ম অনুযায়ী এখন তা নীচের দিকে বেশি ঝুকছে। আর সুইস গেইটের পাশে সব জমি দেখেছি পাকা দেওয়াল দিয়ে ঘর বাড়ি তৈরি করে ফেলেছে। তাহলে পানি যাবে কোথায়। তিনি দাবী করেন সুইস গেইট ঠিকই আছে, সমস্যা অন্য কিছু সেটা ঠিক করার জন্য আমি পৌর মেয়রকে অবগত করেছি।