প্রকাশ্যে যাত্রী বাহী গাড়িতে ধুমপান থামছে না। শহরের দ্রুততম যাতায়াতের এক মাত্র ভরসা ইজিবাইক টম টম। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় যার কর্ম ব্যস্ততা। কেউ ছুটে জীবিকার তাগিদে তার কর্মসংস্থানে, কেউবা তার অফিস আদালত, শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজে। তাদের সবারই যাতায়াতের একটিই যান টম টম। উদ্দেশ্য একটাই নিজ গন্তব্য। সবাই যার যার মত কর জেকে বসে টমটমে। বড়সড় সব যানবাহনের ভিতরের গায়ে লেখা থাকে ধুমপান নিষেধ। কিন্তু শহরের ভিতরের যাতায়াতের ছোট মাপের যানবাহন গুলোতে তার মিল খুজে পাওয়া মুশকিল। সিগারেটের পেকেটের গায়ে ‘ ধুমপান মৃত্যুর কারণ ‘ লেখা থেকলেও ধুমপানকারীরা রীতিমত ধুমপানে ব্যাস্ত। রাস্তার ফুটপাত, চা স্টল, দোকান,বাসাবাড়ি, অলি গলি সবাখানেই সব বয়সি মানুষের ধুমপানের এক অন্যরকম প্রতিযোগিতা। ব্যস্ততম শহর জুড়ে এক অন্যরকম পরিবেশ। ভারী হয়ে উটে নিশ্বাস। শহরের যাত্রীবাহী যানবাহন গুলোও তার ব্যতিক্রম নয়। রিক্সা, টম টমের যাত্রী কিংবা চালকও প্রতিযোগীতার অন্যতম প্রতিযোগী। নিয়ম না মানতে বাধ্য সব শ্রেণীপেশার মানুষ। যানবাহনে চলাচলকারী মহিলা শিক্ষার্থী , শিশু, রুগী নানান শ্রেণীর যাত্রী। যাত্রী, চালক সবাই সুযোগে ধুমপানে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। চালকরা গাড়ি চালিত অবস্থায় হাতে সিগারেট নিয়ে গাড়ি চালাই, ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকায় যাত্রী, চালক। শহর জুড়ে বিশেষ করে ধুমপায়ী চালকদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। গাড়িতে যাত্রী নিয়ে চালকের ধুমপান এক অন্যরকম অপরাধ। চালকই এই অপরাধে প্রথম অপরাধী। ফলে সব যাত্রীরায় নরগযন্ত্রনায় পথ চলে।এসব অপরাধীদের ধরার কোন পদক্ষেপ কিংবা বাধা দেওয়ার কোন নাগরিক নাই। যার সুযোগে যে যার মত করে এই অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।এনিয়ে কিছু সচেতন মানুহ ভিন্ন মত পোষণ করে।তারা এসব অপরাধীদের অপরাধ দমনের জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সব শ্রেণীপেশার মানুষকে সজাগ থাকার দাবী জানান।
গতকাল রোজ সোমবার ২৫ জানুয়ারি বিভিন্ন চালকের হাতে চলন্ত অবস্থায় সিগারেট সেবন করতে লক্ষ করা যায়। এবং কয়েকজন মহিলা যাত্রি বলেন, বর্তমানে প্রায় সব চালকের হাতে সিগারেটের আগুন লক্ষ করা যায়। ফলে আমাদের শ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়। অন্যদিকে অনেক যাত্রিদের হাতে ও একই চিত্র দেখা যায়। তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে আইন থাকলে ও আইনের প্রয়োগ হ-য-ব-র-ল এর মত।
শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নই, প্রশাসনিক ভবনে ও দেখা যায় একই দৃশ্য। বড় বড় ডিগ্রিদারি অফিসারেরা অফিসে বসে বসে টেনশনের ঔষুধ হিসেবে বেনসন সেবন করে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬তম সম্মেলনে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার প্রতিরোধ করার জন্য একটি কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কনভেনশনের বিধানাবলী বাংলাদেশে কার্যকর করার লক্ষ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করা সমীচীন ও প্রয়োজন উল্লেখ করে ২০০৫ সালের ১১নং আইন বলে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন তৈরি হয়। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে এ আইন তৈরি হলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। অনেক ক্ষেত্রে সরকার বা সরকারি দপ্তরগুলো এ আইন মানছে না। ফলে নিষিদ্ধ স্থানেও ধূমপান থেকে বিরত থাকছে না ধূমপায়ীরা।
আইনে যা কিছু বলা আছে : ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো জনবহুল স্থানে ও গণপরিবহনে ধূমপান করতে পারবে না। জনবহুল স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস, গ্রন্থাগার, লিফট, হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভবন, আদালত ভবন, বিমানবন্দর ভবন, সমুদ্রবন্দর ভবন, নৌ বন্দর ভবন, রেলওয়ে স্টেশন ভবন, বাস টার্মিনাল ভবন, ফেরি, প্রেক্ষাগৃহ, আচ্ছাদিত প্রদর্শনী কেন্দ্র, থিয়েটার হল, বিপণি ভবন, পাবলিক টয়লেট, সরকারি বা বেসরকারিভাবে পরিচালনাধীন শিশু পার্ক এবং সরকার কর্তৃক, সরকারি প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত অন্য যে কোনো বা সকল স্থান।’
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, এসব স্থানে ধূমপান করলে ধূমপায়ীর ৫০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
শহরের সচেতন মহলের দাবি ধূমপান আইনের সঠিক প্রয়োগ করে কক্সবাজার শহরের মানুষের সু-স্বাস্থ্য কামনা করছে কর্তৃপক্ষের নিকট।