সদরের খুরুশকুলে সরকারি স্কুলের জমি দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৬
৪১৯
বার পড়া হয়েছে
সদর উপজেলার খুরুশকুল ডেইল পাড়াস্থ খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে নিচ্ছে স্থানিয় প্রভাবশালীরা। সরকারি জমি দখল করে তাতে দোকান, বাড়ি-ঘর এমনকি পাকা স্থাপনা আর মাদ্রাসা করার বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বারণ সত্বেও জোরপূর্বক জমি দখল করছে তারা। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন। এলাকাবাসীর দাবী স্কুলের জমি দখল করতে সুযোগ দিলে সামনে আরো দখলবাজ তৈরি হবে।
কক্সবাজার খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম জাবের বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ডেইল পাড়াস্থ বিএস ১ নং খতিয়ানের ৪২৮২ দাগের খেলার মাঠের নিজস্ব জমি থেকে বেশ কিছু অংশ স্থানিয় প্রভাবশালীরা দখল করে ফেলেছে। তারা কয়েক বছর আগে সেখানে স্থাপনা করতে চাইলেও এলাকার মানুষ বাধা দেওয়ার কারনে স্থাপনা করতে পারেনি। তবে বর্তমানে জোরপূর্বক সেখানে পাকা স্থাপনা করছে তারা। সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে স্কুলের পাশ্ববর্তী মৃত ফজলুল হকের ছেলে কামাল উদ্দিন, আলী আকবরের ছেলে নুরুল হুদা, নুরুচ্ছফা, নুরুল হক আর লোকমান হোসেনের ছেলে সিরাজুদৌলা, আবদুল হামিদ সরকারি জমি দখল করেছে। সেখানে তারা বাড়ি, দোকান বহু আগে করেছে। এখন পাকা স্থাপনা করার ব্যবস্থা করছে। এ সময় সরকারি জমি দখলকারি আলী আকবর বলেন, আমরা খরিদা জমিতে বাড়ি করছি এসব স্কুলের জমি নয়। তবে তাকে খরিদা কাগজপত্র দেখাতে বললে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
এ সময় ডেইল পাড়া এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হক জিকু বলেন, আমি যতটুকু জানি সেটা খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি। কাগজপত্র দেখে প্রাথমিকভাবে সেটাই মনে হচ্ছে, তবে সমস্যা আরো জটিল না হওয়ার আগে সবার সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করা উচিত। আর যদি সরকারি জমি দখলের সুযোগ দেওয়া হয় সামনে আরো কেউ এ ধরণের কাজ করতে উৎসাহিত হবে।স্কুলে জমি দাতা বাচা মিয়া সিকদারের ছেলে মনিরুল হক সিকদার বলেন, যে জমিতে প্রভাবশালীরা স্থাপনা করছে সেটা শতভাগ স্কুলের জমি। মূলত রাস্তার কারনে জমিটি স্কুল থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হচ্ছে, প্রকৃত অর্থে সেটা স্কুলের নিজস্ব সম্পত্তি। আর তারা একবারে খুব বেশি ক্ষমতাধর তাও না, মূলত প্রশাসনের উদ্যোগের অভাবে জমিটি হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্কুলে জমিটি উদ্ধার করা দরকার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বেশ কয়েক জন সাধারণ মানুষ বলেন সরকারি স্কুলের জমিতে গড়ে উঠা মাদ্রাসা টি কে চালায়, কিভাবে চালায় সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। আমাদের জানা মতে এই মাদ্রাসার কোন অনুমোদন নেই, সেখানে কি করা হয় তাও কেউ জানে না। আর যারা সেখানে পড়ে তারা ভবিষ্যতে কি করে সেটাও কেউ জানে না। সবাই জানে মূলত নুরুল হক জমি দখলের উদ্দেশ্যে মাদ্রাসাটি তৈরি করেছে।
খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ছলিম উদ্দিন বলেন, ১৯০৫ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত। সে সময় থেকে জমিটি স্কুলের বর্তমানে যে জমিটিতে স্থাপনা করছে সেটা নিয়ে স্কুলের পক্ষ থেকে ০৫/২০১০ উচ্ছেদ মামলা আছে। আইন অনুযায়ী মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা বাড়ি করতে পারে না। তবুও প্রভাব খাটিয়ে জমিতে কাজ করছে।
প্রধান শিক্ষক এম জাবের জানান, বিদ্যালয়টি সামনে ৮ম শ্রেণিতে উন্নিত হওয়ার তালিকায় প্রথম পর্যায়ে আছে। যে কোন মুহুর্তে ৮ম শ্রেণিতে উন্নিত হতে পারে, তখন আরো অনেক ভবন দরকার হবে। বর্তমানেও ৮০০ শিক্ষার্থী নিয়ে আমরা বিপাকে। শ্রেণি কক্ষ মারাত্মক সংকটের কারনে এখনো অনেকে দাঁড়িয়ে ক্লাস করে। যদি সরকার ভবন দিতে চাই তাহলে জমির অভাবে ভবন করা যাবে না। তাই এলকার বৃহত্তর স্বার্থে স্কুলের জমি উদ্ধার করা দরকার। জমি উদ্ধারে আমি ইতিমধ্যে প্রশাসনকে অবহিত করে চিঠি দিয়েছি। তবুও তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।