কক্সবাজার সদর উপজেলায় নিয়ম বহির্ভুতভাবে শিক্ষক বদলি করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিলো প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এ ঘটনায় জেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আবার অনেকেই তদন্ত পূর্বক জড়িত শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানাযায়, কক্সবাজার সদর উপজেলায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলির জন্য সহকারী শিক্ষকের ৪৫ টি শূণ্য পদের বিপরিতে বদলির জন্য গত ৩ জানুয়ারী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যার আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ১৪ জানুয়ারী। তারই প্রেক্ষিতে ৮০ জন শিক্ষক বদলির জন্য আবেদন করে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসে। নিয়মানুযায়ী আবেদন কারীদের তালিকা সমন্বয় করে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে জেলা শিক্ষা অফিসে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। পরে প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়ে পুণরায় উপজেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়ে দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এরপর মনোনিত শিক্ষকদের নির্দিষ্ট জায়গায় বদলি করে দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, এ বদলির ক্ষেত্রে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি নীতিমালা পুরোপুরি লঙ্ন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, সেন্ট্রাল প্রাইমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিমানবন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুরুস্কুল ধীরেন্দ্র সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দের পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ খুরুস্কুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তেতৈয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি নীতিমালার কোন তোয়াক্ষাই করেনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি পুরো কমিটিকে ব্যবহার করে কৌশলে এ অপকর্মটি করেছেন।
শিক্ষা অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এ বদলিতে ৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি নীতিমালার ৩ এর ৩.৬, ৩.২ ও ৩. ১১ ধারাগুলো লঙন করা হয়েছে। এ ব্যপারে জানতে একাধিকবার ফোন করেও রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ আহমেদ চৌধরিীর সাথে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বদলতিকৃত এক শিক্ষক জানান, ‘প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করে বদলি হতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমার মতো একই ভাবে অন্যান্য শিক্ষকদেরও জন প্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা করে শিক্ষা অফিসকে দিতে হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, উপজেলা শিক্ষা কমিটির রেজুলেশনের ভিত্তিতে শিক্ষক বদলি করা হয়েছে। এতে শিক্ষা কর্মকর্তাদের একক সিম্ধান্তের কোন সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম রহিমুল্লাহ বলেন, ‘নীতিমালা মেনেই শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত মতে প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছে। তারপরও এরই মধ্যে যদি কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে আমরা সংশোধন করে নেব।’