মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা সেবা একটি অন্যতম চাহিদা। সেই চিকিৎসা সেবা নিতে অনেক দুর দুরান্ত থেকে আসে অনেক মানুষ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সদর হাসপাতালে বহিঃবিভাগে রোগীদের আগমন চোখে পড়ার মত। সকাল ৮ টা থেকে শুরু করে বেলা ১/২ টা পর্যন্ত রোগীদের ভীড় জমে ডাক্তারদের কক্ষের দরজার সামনে। কিন্তু বহিঃবিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসকেরর অনুপস্থিতির কারনে ফিরে যেতে হচ্ছে দুর দুরান্ত থেকে আসা অগনিত রোগী। অথচ জেলার সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সদর হাসপাতাল। তারপরেও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত গ্রামের হত দরিদ্র মানুষেরা । তাদের এমন কোন টাকা পয়সা নাইযে৫০০/৬০০ টাকা ডাঃফি দিয়ে প্রাইভেট ডাক্তার দেখাবে। ফলে অনেকেই চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা প্রায় ১২ কাছকাছি তারপরেও দায়িত্বরত ডাক্তার অনুপস্থিত ছিলেন। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের নেই কোন ঠাই। দাড়িয়ে থাকতে থাকতে কোমর ব্যাথা করায় কেউ লম্বা বেঞ্চে কেউ মেঝেতে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। ডাক্তারদের সহকারিদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করলে তারা অনেককেই বলে, ডাক্তার ১টা বাজে আসবে অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা করতে না পারলে চলে যেতো বলেন।
খুরুস্কুল রাস্তার মাথা থেকে আসা মিনু আক্তার নামে এক রোগী জানান, সকাল ৯ টা বাজে ৫ টাকা দিয়ে টিকেট নিতে প্রায় ২০/২৫ মিনিট সময় লাগছে। তারপর ১১১ নং গেলে দাড়াতে হয় দীর্ঘ লাইনে। প্রায় ৩০ মিনিট পরে ডাক্তারেরর কক্ষে গেলে আমাকে দ্বিতীয় তলায় আসতে বলে। কিন্তু কত নাম্বার রুমে আসতে হবে সেটা না বলাই অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাকে। ওর ব্যাবস্থা পত্রে লিখা আছে ২২৫ নাম্বার রুম।
উক্ত রুমে রুগী দেখেন ডাঃ খাইরুন্নেছা মুন্নি। ১২ টা পার হয়ে গেলেও তার কোন দেখা নাই।
এই রকম ২২৭ নং এর ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, ২২৮ এর ডাঃ গাজী মোঃ জাকাওয়াত উল্লাহ, রুমে তালা বদ্ধ। বাকি রুম গুলো খোলা থাকলেও নেই কোন ডাক্তারের দেখা।
১২ টা বাজতেছে এখনো কোন ডাক্তারের খবর নাই। এই রকম আরো অনেক মিনুর একই অভিযোগ।
আরে কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা গেল, ১১১ নং রুমে ডাঃ আশোতোষের কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে কোন যন্ত্র দিয়ে না দেখে ঔষুধ লিখে দেন। ২ মিনিটও লাগেনাই আমাকে দেখতে। যদি প্রাইভেট ভাবে দেখাতাম,কমপক্ষে ২০/২৫ মিনিট করে দেখত। এবং অনেক যন্ত্রপাতি দিয়ে পরিক্ষা করত।
উখিয়া কোতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সেবা নিতে আসা আনোয়ারা জানান, আমি গত কালকেও সকাল ৯টা থেকে প্রায়। সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করছি বিন্তু কোন ডাক্তার না আসাই বাচ্চা কান্না করতেছে তাই চলে গেছি। আজকেও একই অবস্থা। আরো বিভিন্ন রুগে আক্রান্ত রোগীদের গুনতে হচ্ছে অপেক্ষার প্রহর।
এব্যাপারে সদর হাসপাতালে তত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা ডাঃ রতন চৌধুরী জানান, আমাদের দুটি বিভাগ। বহিঃবিভাগ, অন্ত বিভাগ। ডাক্তারেরা অন্ত বিভাগের রোগী দেখতে দেখতে প্রায় ১২টা বা তার বেশিও হয়। তিনি আরো বলেন যে রোগী গুলো ভর্তিতে রয়েছে, তাদেরকে আমরা বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। বহিঃবিভাগের অবশ্যই ১২ টা বা তার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। কারন, অন্তঃ বিভাগের রুগী দেখা শেষ হলে বহিঃ বিভাগে রুগী দেখা শুরু করে।