দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি।বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে। দীর্ঘ এক মাসের সংযম সাধনার পর ঘরে ঘরে, জনে জনে আনন্দ ও খুশির বার্তা পৌঁছে দিতে আবার এসেছে ঈদুল ফিতর। পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই এই দিনটির জন্য মুসলিম বিশ্ব অপেক্ষা করে থাকে। বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে দিনটি বিশেষ আনন্দঘন পরিবেশে উদ্যাপন করা হয়। ঈদ একটি আনন্দ উৎসব। হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি ভুলে মানুষে মানুষে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় এই দিনটিতে। এই আনন্দ উৎসব তখনই তাত্পর্যময় হয়ে ওঠে যখন তা একটি সর্বজনীন রূপ নেয়। ঈদের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়। তাই ইসলাম ধর্মে ধনী-গরিবের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ারও একটি সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে ফিতরা ও জাকাত আদায়ের মাধ্যমে।
ঈদের আনন্দ প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে বাড়িতে ফেরা শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি ঘোষণায় দীর্ঘদিন পর মানুষ অনেকটা স্বচ্ছন্দে ঘরে ফেরার সুযোগ পেয়েছে। ট্রেন, বাস ও লঞ্চের টিকিট নিয়ে বিড়ম্বনার মাত্রা অনেক কমেছে। সড়ক-মহাসড়কে যানজটের ভোগান্তি অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক কম দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে ঈদের দীর্ঘ ছুটি কিছুটা স্বস্তির কারণ হয়েছে। প্রতিবছর ঈদের সময় বাড়িতে ফেরা মানুষের নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা থাকে। দীর্ঘ ৯ দিনের ছুটি থাকায় মানুষ সহজেই তাদের পরিকল্পনা সাজাতে পেরেছে।
ঈদ শুধু মুসলমানদের প্রধান একটি ধর্মীয় উৎসবই নয়, সৌভ্রাতৃত্ব শেখার গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষও। এই উৎসবের মাধ্যমে প্রত্যেক মুসলমান একে অপরের আরো কাছাকাছি আসে। শুধু মুসলমান নয়, অন্যান্য ধর্মের মানুষের সঙ্গেও আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। পবিত্র রমজান আমাদের চিত্তশুদ্ধির যে শিক্ষা দিয়েছে, ঈদুল ফিতর সেই শিক্ষা কাজে লাগানোর দিন। আজ একটি দিনের জন্য হলেও ধনী-গরিব সবাই দাঁড়াবে এক কাতারে। ভুলে যেতে হবে সব বৈষম্য, সব ভেদাভেদ।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের কারণে দেশ আজ এক সংকটময় মুহূর্তে উপনীত হয়েছে। পবিত্র মাস রমজান সংযম ও মানবতার যে শিক্ষা দেয় তাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে। হিংসা, বিদ্বেষ ও হানাহানি থেকে নিজেদের মুক্ত করতে হবে। শান্তিপ্রিয় মানুষ হিসেবে সারা বিশ্বে মুসলমানদের মর্যাদা ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে। ইসলাম যে প্রকৃত অর্থেই শান্তির ধর্ম সেটি প্রমাণ করতে হবে। এবারের ঈদে এই হোক আমাদের অন্তরের শপথ।
সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক ঈদের সওগাত। আলিঙ্গনের ভেতর দিয়ে সবাই ভুলে যাক হিংসা-বিদ্বেষ। আমাদের জীবনে আসুক শান্তি-সমৃদ্ধি। বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য। দুর্নীতি ও দারিদ্র্যমুক্ত হোক দেশ। ঈদুল ফিতরে এটাই আমাদের কামনা। ডেইলি কক্সবাজার’র গ্রাহক, পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতাসহ সবাইকে জানাই ঈদের আগাম শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।