প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তথাকথিত আন্দোলনের নামে সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট গুপ্তহত্যা ঘটিয়ে চলেছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার পর তারা দেশে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড শুরু করেছে। তিনি আজ শনিবার বিকেলে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আইডিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত জোট) বেছে বেছে সাধারণ মানুষকে তাদের হত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। তারা মসজিদের ইমাম, গির্জার পাদরি, মন্দিরের পুরোহিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হত্যা করে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক কিছু হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। সন্ত্রাসীদের কোনোভাবেই এ দেশের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। আমরা বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি আমাদের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির এক কাজিনকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর কী দোষ ছিল? সে কী অপরাধ করেছে? নাকি দীপু মনির কাজিন হওয়াই তাঁর অপরাধ?’ তিনি এ প্রসঙ্গে মসজিদের ইমাম ও পরিবারের অভিভাবকদের আরও সচেতন ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসলাম কোনোভাবেই হত্যাকে সমর্থন করে না—ধর্মের এই মর্মবাণী সবাইকে বোঝাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘ইসলাম শান্তি ও সহিষ্ণুতার ধর্ম। ইসলাম আমাদের ধৈর্যধারণ করার শিক্ষা দেয়। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি পছন্দ করতেন না। কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে যেন আঘাত না করা হয়, তিনি সে পরামর্শই দিতেন।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী একরামুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রী মুহম্মদ ফারুক খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও এস এম কামাল হোসেন, কোটালিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুভাস চন্দ্র জোয়ার্দ্দার সমাবেশে বক্তৃতা করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপজেলার ১০০টি প্রাথমিক ও ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ কম্পিউটার ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করেন।