সিভিল সার্জন অফিসে ২ কোটি টাকার টেন্ডার গোপনে ভাগবাটোয়ারা
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৬
৪২২
বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজার রিপোর্ট :
কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসে ২ কোটি টাকার টেন্ডার হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র। পূর্বে দরপত্র দাতাদের না জানিয়ে, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির বেশির ভাগ সদস্যের অনুপস্থিতে শুধুমাত্র সিভিল সার্জনের গোপন যোগসাজসে নোয়াখালীর একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়েছে। এতে স্থানিয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো চরম হতাশা এবং ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে। এতে করে মূলত জেলাবাসীকে বঞ্চিত করা হয়েছে আর সরকারি টাকা ব্যাপক লুটপাট হবে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে জেলার সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ঔষধ, সার্জিক্যাল প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, হাসপাতালের প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জাম সরবরাহ করার জন্য একটি দরপত্র গ্রহন এবং যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কক্সবাজারের বাইরের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পাচ্ছে সেটা অনেকটা নিশ্চিত। এ বিষয়টি জানতে পেরে দরপত্র দাতাদের মাঝে ক্ষোব্দ প্রতিক্রিয়া হয়। এবং তারা সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার ছৈয়দ আহমদ উজ্জল, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শর্মা ব্রাদাস, প্রীতম মেডিকোর সত্বাধিকারীরা জানান এই টেন্ডারটি ২০১৫ সালে ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রায় ৮৪ জন দরপত্র ফেলেছে। কিন্তু অদৃশ্য কারনে সিভিল সার্জন উক্ত টেন্ডারটি বাতিল করে। এবং নিয়ম অনুযায়ী পূর্ন টেন্ডার হলে স্থানিয় এবং জাতীয় প্রত্রিকায় দিয়ে এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি এবং পুর্বের দরপত্র দাতা সবাইকে জানিয়ে দরপত্র গ্রহন করা নিয়ম। কিন্তু সিভিল সার্জন সেটা না করে হঠাৎ করে শুনেছি ১৭ জানুয়ারী দরপত্র বাছাই বা গ্রহন করা শেষ। এ ব্যাপারে দরপত্র মুল্যায়ন কমিটির সদস্য জেলা বাজার অনুসন্ধান কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান বলেন সিভিল সার্জন অফিস থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলাম কিন্তু সঠিক তথ্য বা বিষয়টি না জানার কারনে আমি উপস্থিত ছিলাম না। এমন কি কমিটির সদস্য সচিব সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুলতান আহাম্মদ সিরাজী জানান, আমিও উপস্থিত ছিলাম না তাই টেন্ডার কি হয়েছে সেটা আমি বলতে পারবো না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন আমরা গিয়ে দেখেছি আগে থেকে সব কিছু ঠিক করে রাখা হয়েছে আমাদের শুধু উপস্থিতি স্বাক্ষর দিতে বলেছে তবে আমি প্রতিবাদ করেছি। মোট কথা এটা গোপন টেন্ডার হয়েছে এটা ঠিক। আলাপকালে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, এটা এক বিষ্ময়কর টেন্ডার সবকিছু পরিকল্পিত, মূলত নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কাজ দেওয়াটা ছিল মূল কাজ। আর পত্রিকায় দেওয়াটা ছিল স্টোর কিপার শাহনেওয়াজের দায়িত্ব। তিনি ঢাকার একটি বাংলা আর একটি ইংরেজি প্রত্রিকায় দিয়েছে তবে সে সব পত্রিকার নাম কি সেটা তিনি ভাল জানেন। তবে তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল তাই তার বক্তব্য নেওয়া য়ায় নি। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একই ধরনের টেন্ডার জেলা সদর হাসপাতালে ছিল চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী। সেটাও একই ভাবে বাতিল করে বর্তমানে একই সিন্ডিকেটকে দিতে সব কিছু তৈরি। বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারীরাই আশংকা প্রকাশ করেন মূলত তারা জেলার বাইরের লোক, শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এসেছে। তারা যে কোন ভাবে মোটা অংকের মোনাফা করে চলে যাবে। ক্ষতি হবে আমাদের। এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ কমরউদ্দিন বলেন, আমি বর্তমানে ঢাকা আছি এ বিষয়ে কথা বলতে হলে অফিসে এসে বলতে হবে।