সেন্টমার্টিন দ্বীপে নেমে প্রথম বিচে হাঁটা শুরু করলে কয়েক মিনিট পরেই অর্থাৎ অনেক কাছেই এই মৃত্যুফাঁদ। ওখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে হতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই হয়ত ভুলবশতঃ অনেকে পা দিয়ে বসেন এই জায়গাটিতে। কারণ, নীল পানির আচ্ছাদনে আলাদা করে বোঝার কোন উপায়-ই নেই।
জাহাজে করে সবাইকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ফেরিলাইনে নামিয়ে দেয়া হয়। আর সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ব্রিজটা পার হয়ে এসে নামতে হয় সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এখানে নামলেই হাতের ডানদিকে যে বিচটা রয়েছে এটিই সেই বিচ। প্রায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেশি-বিদেশি পর্যটক এবং শিক্ষার্থীগণ এই বিচ ধরে হাঁটেন এবং ব্রিজের গোড়ার দিক থেকে পানিতে নামেন এবং কিনারা ঘেঁষে ডান দিকে সামনের দিকে এগিয়ে যান। পানিতে একবার নেমে পড়লে আর কেউই কিন্তু বালিতে উঠে আসেন না, সামনে এগুতে থাকেন পানি ধরেই। ঠিক সোজা সামনের দিকে এগিয়ে গেলে এবার দ্বীপটা হাতের বাঁ দিকে টার্ন নেয়। স্থানটিকে বলা হয় ‘জিনজিরা উত্তরপাড়া’। স্থানীয়রা বলেন উত্তর বিচ। সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারদিক ঘিরে ১.৫ কিলোমিটার পর্যন্ত রয়েছে মূল্যবান কোরাল। কোরাল আহরণ বেআইনি হলেও সেই জায়গাটিতে চলছে অবাধ কোরাল আহরণ। যার কারণে অনেক জায়গাজুড়ে বড়-সড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সেন্টমার্টিনের ইকোকে নষ্ট করে দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে কোন নির্দেশনা এবং সতর্কতামূলক প্রচারণা না থাকায় পর্যটক-শিক্ষার্থীগণ সাঁতার কাটতে কাটতে এই টার্ন দিয়েই বাঁ পাশের বিচের দিকে এগুতে থাকেন। আর তখনি কিছু বুঝে উঠার আগেই সমুদ্রের অতলে হারিয়ে যান। বিশেষ করে ভাটার সময় স্থানটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। এভাবে প্রতি বছরই পর্যটক-শিক্ষার্থীগণ সাঁতার কাটতে নেমে সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। অবশ্য মাঝে-মধ্যে স্থানটিতে সাময়িকভাবে লাল পতাকা লাগিয়ে দেয়া হয়। তবে পর্যটকদের সতর্ক করতে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।