পেকুয়ায় সরকারী অনুমোদনহীন করাতকলে চলছে নির্বিচারে কাঠ চিড়াইয়ের মহোৎসব। বছরের পর বছর ধরে এমন কর্মযজ্ঞ চললেও পরিবেশ অধিদপ্তর বা ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের দেখাই মিলে না। ফলে, হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার বনজ সম্পদ আর সবুজায়ন।
সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা। সাত ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন যথাক্রমে টইটং, বারবাকিয়া ও শিলখালীর ভৌগলিক অবস্থান পাহাড়ি বনাঞ্চল। পেকুয়া উপজেলা কক্সবাজার জেলার অধিন হলেও এখানকার পাহাড়ী ৩ইউনিয়নের বিস্তির্ণ বনভুমি চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগের অধিনে। যার কারণে দুই জেলার প্রশাসনিক টানা হেচঁড়ার মধ্য দিয়ে সরকারী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দেখভাল করা হয়ে থাকে। যার কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বনজ সম্পদের রক্ষনাবেক্ষন দো’টানা অবস্থায় বিদ্যমান। আর এর সুযোগ নিচ্ছে নানা ধরনের অসাধু লোকজন।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেহেরনামায় চড়াপাড়া নতুন বাজারের প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে ২টি, পশ্চিম পাশে ১টি, বারবাকিয়া ইউনিয়নে ২টি, টইটং ইউনিয়নের হাজীর বাজারে ২টি, মৌলভী বাজারে ২টি, টইটং বাজারে ১টি, রাজাখালীর আরব শাহ বাজারে ২টি, পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজার এলাকায় ৩টিসহ পুরো উপজেলায় প্রায় অর্ধ ডজনেরও বেশী কাঠ চিরাইয়ের করাত কল রয়েছে। এসব করাতকলের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতির বিধান থাকলেও এখানে তা নেই প্রায় সকল করাতকলের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক করাতকল মালিক বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব করাতকল। কোন ধরনের সরকারী অনুমতি ছাড়াই পরিচালিত এসব করাতকলে দিনের পর দিন ধরে চলছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রধান বনজ সম্পদ গাছপালা চিরাইয়ের মহোৎসব। এসব করাত কলের মালিক ও পরিচালকদের সাথে অসাধু গাছ ব্যবসায়ী ও বনদস্যু সিন্ডিকেটের রয়েছে গভীর সখ্যতা। তাদের মাধ্যমে করাতকলগুলোতে উপজেলার উপকুলীয় বন বিভাগ ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছপালা কেটে এনে নির্বিচারে চিরাই করে অবাধে চলছে কাঠের ব্যবসা
পরিবেশ সচেতন, সাধারণ মানুষ ও সুশীল সমাজের লোকজন অভিযোগ করে বলেন, সাতটি ইউনিয়নের ছোট একটি উপজেলায় অর্ধ ডজনাধিক কাঠ চিরাইয়ের অনুমোদনহীন করাতকল হওয়ায় চরম হুমকি ও ঝুঁকির মুখে পড়েছে উপজেলার বিস্তির্ণ সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগের অধিন বারবাকিয়া রেঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তম কুমারের কাছে জানতে চাইলে উপজেলার কোন করাতকলেরই সরকারী অনুমতি নেই মন্তব্য করে তা বন্ধে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করবেন বলে জানান।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খাঁনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, শীঘ্রই সরকারী অনুমোদনহীন করাতকল বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।