বড় ধরনের দুর্ঘটনার জন্য আশংকা রয়েছে লামা–চকরিয়া সড়কের কুমারী বেইলি ব্রিজ। ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে এক দিকে হেলে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহূর্তে ব্রিজটি ধসে পড়ে ব্যাপক জানমালের ক্ষতিসহ সারা দেশের সাথে লামা ও আলীকদমের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সূত্র জানায়, লামা ও আলীকদমের জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে ১৯৮৫ সালে তৎকালিন এরশাদ সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চকরিয়া হাঁসের দিঘী থেকে শুরু করে দুর্ঘম পাহাড়ের মধ্য দিয়ে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আলীকদম–লামা–চকরিয়া সড়কটি নির্মিত হয়। তৎসময়ে দ্রুত কাজ সম্পাদনের জন্য সড়কের লামা–চকরিয়া সীমান্তে কুমারী এলাকায় নির্মিত হয় বেইলি ব্রিজ। সড়কটি নির্মিত হওয়ার পর দীর্ঘ বছর সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছিল। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে ন্যস্ত হওয়ার পর প্রতিবছর সড়কের বিভিন্ন মেরামত দেখিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা বেহাত হলেও কার্যত সড়কটি তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত এ সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণদের। সড়কের বেইলি ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘ ৩০ বছরেও কোন স্থায়ী ব্রিজ নির্মিত হয়নি। সরেজমিন পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গাছ, বাঁশ ও পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাই অতিরিক্ত ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে কুমারি বেইলি ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। তাছাড়া ব্রিজের উভয় পাশ থেকে বিধি বহির্ভূতভাবে বছরের পর বছর বালি উত্তোলনের কারণে ব্রিজটি দুর্বল হয়ে বর্তমানে একদিকে হেলে গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, চকরিয়ার হাঁসের দীঘি ও তৎসংলগ্ন এলাকার হিরোইন সেবীরা রাতের আঁধারে ব্রিজের বিভিন্ন অংশ খুলে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে। একারনেও ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ ব্রিজটির দু’পাশে সতর্কতার জন্য লাল পতাকা উত্তোলন করে দায়িত্ব শেষ করলেও ভারি যানবাহন চলাচলে কোন ধরনের বিধি–নিষেধ আরোপ করে নাই। যার কারণে গাছ, বাঁশ ও পাথর বোঝাই করে ভারি যানবাহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে একই সড়কের ইয়াংছা বাজার এলাকার বেইলি ব্রিজটি ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্রিজের উভয় পাশের মাটি সরে যাওয়া এবং উভয় পাশের পাহাড়ি ঝিরিটিতে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আগামী বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের পানি নামার সময় ব্রিজটিতে ভাঙন সৃষ্টির আশংকা দেখা দিয়েছে। লামা বাজারের ব্যবসায়ী সাহাদাত হোসেন জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য বোঝাই করে মালামাল নিয়ে আসতে শংকিত হয়ে পড়ি।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের লামা লাইনঝিরিস্থ কার্যালয়ে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। সেলফোনে ওই কার্যালয়ের কার্য সহকারি মোঃ তাহের জানান, সড়কের বেইলি ব্রিজ দু’টির স্থলে ৪০ মিটার স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দ্রুত কুমারী বেইলি ব্রিজটি মেরামত করা হবে। লামা–চকরিয়া সড়কে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ, যানবাহনের মালিক ও চালকরা সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রিজ দু’টি দ্রুত সংস্কার এবং আগামী বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই বেইলী ব্রিজ দু’টির পরিবর্তে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।