বৃহস্পতিবার প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের ২০১৫ সালের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে এই আহ্বান জানানো হয়।
প্রতিবেদনটিতে, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনকে অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক বলে অভিহিত করা হয়।
এ নির্বাচনকে ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য ইতিবাচক উন্নতি’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের নির্বাচনকেও অবাধ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করে সব রাজনৈতিক দলকে কাজ করতে আহ্বান জানায় যুক্তরাজ্য।
প্রতিবেদনে বিশ্বের ৩০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোরে মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কাও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের বছরের ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটেনি। প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, গত বছরের প্রথম তিন মাস বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেফতার, পরিবহন ধর্মঘট এবং লাগাতার হরতালসহ নানা বিষয়ে এই দুই দল মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। জনগণের নিরাপত্তা ও জীবিকার ওপর এর প্রভাব পড়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে বাক স্বাধীনতার ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল। চরমপন্থীদের হাতে কয়েকজন সেক্যুলার লেখক ও সংখ্যালুঘুর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
যুক্তরাজ্য গত বছর মানবাধিকার ও গণতন্ত্র কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্লগারদের নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এছাড়াও ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬’ এর পর্যালোচনাকে আন্তর্জাতিক মানের করতে সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করা হয়।
বিচার পেতে দেরি হওয়ায় মানুষের আইন হাতে তুলে নেয়ার প্রবণতার দিকটিও ইঙ্গিত করেছে যুক্তরাজ্য।
এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে যুক্তরাজ্যের ৩৭ লাখ পাউন্ড এবং পুলিশ সংস্কার কর্মসূচিতে ১২ লাখ পাউন্ড সহায়তা দেয়ার কথাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে তিন যুদ্ধাপরাধীসহ কমপক্ষে পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে।
প্রতিবেদনে নারীদের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করা হলেও নারীরা এখনও পুরুষের মতো সামাজিক অবস্থান উপভোগ করতে পারছে না বলে মন্তব্য করা হয়।
এতে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির প্রশংসা করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রয়েছে ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার উচ্চাকাংখা। ২০১৬ সাল ও এরপর একটি ইতিবাচক মানবাধিকার গতিপথের নিশ্চয়তা দেয়ার ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করছি।