দেশের ৭১৭টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপে এই ইউনিয়নগুলোতে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। এখন শুরু হয়েছে ভোট গণনার কাজ। নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছে, ছোট ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো এমন ইউনিয়নগুলোর নির্বাচনের ফল সন্ধ্যার মধ্যেই পাওয়া যাবে। আর আজ রাতেই প্রায় সব ইউপির বেসরকারি ফলাফল পাওয়া যাবে।
নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রার্থীদের অনেকেই ভোট বর্জন, সরকারদলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীদের বাধা দেওয়া, জালভোট, ব্যালট ছিনতাই, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্যে ভোটগ্রহণ হয়েছে। তবে বেশ কিছু ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আবার কয়েকটি কেন্দ্রে সহিংসতা-অনিয়মের কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়। অবশ্য প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত ৭১৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৫৪টিতে সরকারদলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
দেশে এবারই প্রথম স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তরের এই নির্বাচন হচ্ছে রাজনৈতিক দলের পরিচয় ও প্রতীকে। আজ দেশের ৭১৭টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। এই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত নির্বাচনী সহিংসতায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। প্রার্থী, সমর্থকসহ আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জমা পড়েছে প্রায় ৬০০। তবে এর প্রতিকার হয়েছে খুবই কম।
আজ যেসব ইউপিতে ভোট হবে, তার মধ্যে ৫৪ টিতে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার পথে। এঁরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত। একই পদে ১২১টি ইউপিতে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। এ ছাড়া প্রথম ধাপের অন্তর্ভুক্ত টাঙ্গাইলের নাগরপুরের ১১টি ইউনিয়নে ভোট হবে আগামীকাল বুধবার এবং কক্সবাজারের টেকনাফের দুটি ইউনিয়নে হবে ২৭ মার্চ।
আওয়ামী লীগ-বিএনপি ছাড়াও এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি, জাসদ, বিকল্পধারা, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, বিএনএফ, সিপিবি, তরীকত ফেডারেশন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ন্যাপ অংশ নিয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ছয় ধাপে দেশের ৪ হাজার ২৭৫টি ইউপিতে ভোট নেওয়া হবে।
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোট ২০ জন সদস্যের বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। এর বাইরে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র্যাব, বিজিবি ও আনসারের সমন্বয়ে গড়া ভ্রাম্যমাণ ও অপেক্ষমাণ বাহিনী (স্ট্রাইকিং ফোর্স) এবং বিচারিক ও নির্বাহী হাকিমগণ দায়িত্ব পালন করছেন।